উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ফাইনাল দেখা নিয়ে বিতর্ক, ইন্টার্ন পড়ুয়াদের সঙ্গে তীব্র বিরোধ

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনাল ম্যাচ (ভারত বনাম নিউজিল্যান্ড) দেখা নিয়ে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে ৯ মার্চ, যখন পড়ুয়ারা ফাইনাল ম্যাচ দেখার জন্য কলেজের লেকচার থিয়েটার ব্যবহার করেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কলেজের ডিন অনুপম নাথ গুপ্তাকে ঘেরাও করে রাখেন পড়ুয়ারা, যা বুধবার পর্যন্ত চলে।

ঘটনার সূত্রপাত হয় যখন পড়ুয়ারা ফাইনাল ম্যাচ দেখার জন্য লেকচার থিয়েটার-২৫০ ব্যবহারের পরিকল্পনা করেন। কিন্তু সেখানে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে তারা লেকচার থিয়েটার-৪০০ ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেন। পড়ুয়াদের দাবি, তারা গাইনো ডিপার্টমেন্টের ফ্যাকাল্টি এবং কলেজের অধ্যক্ষ ইন্দ্রজিৎ সাহার কাছ থেকে মৌখিক অনুমোদন নিয়েছিলেন। এমনকী, অধ্যক্ষ নিজেই ফোনে গার্ডদের লেকচার থিয়েটার খুলে দিতে বলেছিলেন বলে পড়ুয়ারা জানান।

তবে ম্যাচ দেখার পরই শুরু হয় সমস্যা। কলেজের ডিন অনুপম নাথ গুপ্তা অভিযোগ করেন যে পড়ুয়ারা বিনা অনুমতিতে লেকচার থিয়েটার ব্যবহার করেছেন। এর জেরে তিনি কমিউনিটি মেডিসিনের ইন্টার্ন সানি মান্নাকে শো-কজ করেন। এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে পড়ুয়ারা বুধবার দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত ডিনকে ঘেরাও করে রাখেন। উভয় পক্ষের মধ্যে তীব্র বাদানুবাদ হয়।

সানি মান্না বলেন, ‘‘আমি কোনো অনুমতির লেটারে সই করিনি। লেকচার থিয়েটারও আমি খুলিনি। প্রিন্সিপাল নিজেই এটি খুলিয়েছিলেন। তাহলে আমার নাম কেন জড়ালো, তা বুঝতে পারছি না।’’ আরেক পড়ুয়া বলেন, ‘‘এটা স্পষ্টতই টার্গেট করে করা হয়েছে। থ্রেট কালচার আবার ফিরে এসেছে। ডিনের উচিত ছিল আগে সব তথ্য যাচাই করা।’’

ডিন অনুপম নাথ গুপ্তা তাঁর পক্ষে বলেছেন, ‘‘লেকচার থিয়েটার শুধুমাত্র অ্যাকাডেমিক কাজের জন্য ব্যবহার করা হয়। খেলা দেখার জন্য আরও অনেক জায়গা রয়েছে। সেখানে দেখা উচিত ছিল। যারা অভিযোগ করেছিলেন, তাদের নাম আমার জানা নেই, তবে আমি তাদের চিনি।’’

এই ঘটনায় কলেজ ক্যাম্পাসে তীব্র উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। পড়ুয়ারা ডিনের বিরুদ্ধে একতরফা সিদ্ধান্ত নেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন এবং ন্যায্যতা দাবি করেছেন। কলেজ কর্তৃপক্ষের এখন উচিত এই বিষয়টি সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করে সমাধান করা, যাতে ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে।

এই ঘটনা মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়াদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করেছে এবং কলেজ প্রশাসনের সঙ্গে তাদের সম্পর্কে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। পড়ুয়ারা আশা করছেন, এই বিষয়টি দ্রুত সমাধান হবে এবং তাদের প্রতি ন্যায্য আচরণ করা হবে।

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy