
মঙ্গলবারই ভারতের তরফে স্পষ্ট জানানো হয়েছিল যে আমদানি শুল্ক কমানোর বিষয়ে এখনই কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। আমেরিকাকে এই নিয়ে কোনো প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি আলোচনায় আসে মূলত মার্কিন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক দাবির কারণে। গত শুক্রবার তিনি বলেছিলেন, ভারত মার্কিন পণ্যের ওপর আরোপিত শুল্ক কমাতে রাজি হয়েছে। ট্রাম্পের অভিযোগ, “ভারত আমাদের পণ্যের ওপর বিশাল শুল্ক বসায়, ভারতে কিছু বিক্রি করাও কঠিন। তবে এবার তারা শুল্ক কমাতে সম্মত হয়েছে।”কিন্তু ট্রাম্পের সেই দাবিকে কার্যত উড়িয়ে দিয়েছে ভারত। আর তারপরেই কি বাণিজ্যিক পদক্ষেপে কড়াকড়ি বাড়াল মার্কিন প্রশাসন? বুধবারই আমেরিকা আনুষ্ঠানিকভাবে ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের আমদানির ওপর ২৫% শুল্ক আরোপ করেছে। এই সিদ্ধান্তের কোনো ব্যতিক্রম রাখা হয়নি, যা বিশ্বব্যাপী শিল্প ও বাণিজ্যে বড় প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বৈশ্বিক বাণিজ্যে নতুন উত্তেজনামার্কিন প্রশাসনের এই নতুন শুল্ক সিদ্ধান্তের ফলে গৃহস্থালী সরঞ্জাম, গাড়ি নির্মাণ ও পানীয়র ক্যান উৎপাদনের খরচ বাড়বে, যার ফলে সরাসরি ভোক্তাদের ওপর প্রভাব পড়তে পারে। আমেরিকার গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য অংশীদার কানাডা, মেক্সিকো ও চীনকেও এই নতুন শুল্কের আওতায় আনা হয়েছে।কানাডা বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৫০% অ্যালুমিনিয়াম ও ২০% ইস্পাত সরবরাহ করে। ফলে এই শুল্ক বৃদ্ধির ফলে আমেরিকান বাজারে কাঁচামালের দাম বাড়তে পারে। এছাড়াও, ব্রাজিল, মেক্সিকো, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও দক্ষিণ কোরিয়া থেকেও ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানি করা হয়।ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন শুল্ক নীতির জেরে কানাডা তার বিদ্যুৎ সরবরাহের ওপর আমেরিকান তিনটি রাজ্যে বাড়তি কর বসায়। এর ফলে বাণিজ্য উত্তেজনা আরও বাড়ে। যদিও আলোচনার মাধ্যমে এই বাড়তি কর সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হয়েছে, তবে ভবিষ্যতে এই উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ভারতের ওপর কী প্রভাব পড়বে?এই শুল্ক বৃদ্ধির প্রত্যক্ষ প্রভাব ভারতের ওপর পড়বে না বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে আমেরিকার এমন হঠাৎ শুল্ক বৃদ্ধি ভারতের জন্য এক ধরনের পরোক্ষ বার্তা হতে পারে। ভবিষ্যতে যদি আমেরিকা ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কের বিষয়ে নতুন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে এই শুল্ক নীতির উদাহরণ টেনে আনা হতে পারে।বিশ্ব বাণিজ্যের বর্তমান পরিস্থিতিতে মার্কিন প্রশাসনের এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক বাজারে অস্থিরতা বাড়াতে পারে। ভারত আপাতত শুল্ক হ্রাস না করার সিদ্ধান্তে অনড় থাকলেও, ভবিষ্যতে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক টানাপোড়েন নতুন দিকে মোড় নিতে পারে।