
মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা তুঙ্গে, কারণ ইরান কয়েক ঘণ্টা ধরে ইসরায়েলে তীব্র হামলা চালাচ্ছে। তবে এই ব্যাপক হামলার ঠিক আগে, ইসরায়েল নিজেই ইরানের অভ্যন্তরে, বিশেষ করে ইসফাহানকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছিল, যা বর্তমান সংঘাতের একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বিবিসি বাংলার সূত্র মতে, ইসফাহান শহরটি ইরানের পারমাণবিক অবকাঠামোর একটি অত্যন্ত সংবেদনশীল অংশ। এখানে দেশটির গুরুত্বপূর্ণ ‘কনভারসন প্ল্যান্ট’ বা রূপান্তর কেন্দ্রটি অবস্থিত। এই প্ল্যান্ট ছাড়াও ইসফাহান ও এর আশেপাশে উল্লেখযোগ্য ইরানি সামরিক অবকাঠামো রয়েছে, যার মধ্যে একটি বড় বিমান ঘাঁটি এবং একটি প্রধান ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদন কমপ্লেক্স উল্লেখযোগ্য।
২০২৪ সালের এপ্রিলেও ইসরায়েল ইসফাহানের একটি বিমানবন্দরে একটি বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ক্ষতি করেছিল, যা এই অঞ্চলের প্রতি ইসরায়েলের বিশেষ আগ্রহের ইঙ্গিত দেয়।
ইরান বরাবরই দাবি করে আসছে যে, ইসফাহানের এই স্থাপনাগুলো সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে, অর্থাৎ পারমাণবিক জ্বালানি উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত হয়। তবে ইসরায়েল এবং পশ্চিমা দেশগুলো দীর্ঘকাল ধরে সন্দেহ করে আসছে যে, তেহরান গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কাজে ইসফাহানের এই কনভারসন প্ল্যান্ট ব্যবহার করছে। ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলা এই দীর্ঘদিনের সন্দেহের ওপর নতুন করে আলোকপাত করেছে এবং এই অঞ্চলে পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার নিয়ে উদ্বেগ আরও বাড়িয়েছে।
ইসরায়েলের ইসফাহান হামলার পরপরই ইরান ইসরায়েলের ওপর ব্যাপক পাল্টা হামলা শুরু করে। এই পাল্টাপাল্টি হামলা মধ্যপ্রাচ্যে এক ভয়াবহ সংঘাতের সূচনা করেছে, যেখানে উভয় পক্ষই একে অপরের গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত স্থানে আঘাত হানছে। ইসফাহানে হামলার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর ইরানের প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপের তীব্রতা আরও বেড়েছে।
বর্তমানে আন্তর্জাতিক মহলে এই সংঘাত নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছে। পারমাণবিক স্থাপনাগুলো হামলার লক্ষ্যবস্তু হওয়ায় সংঘাতের মাত্রা ও সম্ভাব্য পরিণতি নিয়ে নতুন করে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতি মধ্যপ্রাচ্যকে এক চরম অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিয়েছে।