
মধ্যপ্রাচ্যের আকাশে সংঘাতের কালো মেঘ আরও ঘনীভূত হচ্ছে। টানা তৃতীয় দিনের মতো ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে নতুন করে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। রবিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যার দিকে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এই হামলার তথ্য নিশ্চিত করেছে। ইসরায়েলের দাবি, বেশিরভাগ ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করা হয়েছে, তবে এতে এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
আইডিএফের হালনাগাদ তথ্যে বলা হয়েছে, গত এক ঘণ্টায় ইসরায়েল লক্ষ্য করে বেশ কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে ইরান। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তাদের অত্যাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে ইরান থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রের বেশিরভাগই সফলভাবে প্রতিহত করা হয়েছে। যদিও কোনো হতাহতের খবর মেলেনি, পরিস্থিতি যে গুরুতর, তা স্পষ্ট। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জনসাধারণকে হোম ফ্রন্ট কমান্ডের নির্দেশনা কঠোরভাবে মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছে।
গত তিন দিন ধরে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে হামলা-পাল্টা হামলার এক বিপজ্জনক চক্র চলছে। এই সংঘাতের সূত্রপাত হয় শুক্রবার, যখন ইসরায়েল ইরানের অভ্যন্তরে হামলা চালায়। এর প্রতিশোধ হিসেবে ইরানও পাল্টা আক্রমণের পথ বেছে নিয়েছে, যা পরিস্থিতিকে আরও অগ্নিগর্ভ করে তুলেছে। ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি ভূখণ্ড লক্ষ্য করে নতুন করে প্রতিশোধমূলক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করেছে ইরানের সামরিক বাহিনী।
ইরানের হামলার পরপরই ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী দেশজুড়ে সাইরেন বাজিয়ে বাসিন্দাদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বিষয়ে সতর্ক করে দেয়। প্রাথমিকভাবে ইসরায়েলি বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। শহরের আকাশে সাইরেনের আর্তনাদ মুহূর্তে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়। তবে কিছুক্ষণ পর পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলে ইসরায়েলিরা আশ্রয়স্থল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার অনুমতি পান।
মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টা বারবার এই ধরনের সংঘাতের মুখে পড়ে ব্যাহত হচ্ছে। ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে এই নতুন করে শুরু হওয়া হামলা-পাল্টা হামলা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক মহল এই পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং উত্তেজনা প্রশমনের জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চলছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এখনই এই সংঘাতের চূড়ান্ত পরিণতি কী হবে, তা বলা কঠিন।
সূত্র: বিবিসি, আলজাজিরা।