
মধ্যপ্রাচ্যে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলা সংঘাত ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। শুক্রবার রাতে ইসরায়েলে ইরানের ব্যাপক পাল্টা হামলায় অন্তত একজন নিহত এবং প্রায় অর্ধশত ইসরায়েলি আহত হয়েছেন। এর রেশ কাটতে না কাটতেই শনিবার সকালে ইরানের রাজধানী তেহরানের মেহরাবাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেও হামলার খবর পাওয়া গেছে।
ইসরায়েলের জরুরি সেবাবিষয়ক সংস্থা মেগেন ডেভিড অ্যাডমের (এমডিএ) তথ্য অনুযায়ী, আহতদের আঘাতের ধরন হালকা থেকে মাঝারি। তবে সিএনএন-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত ইসরায়েলি দূত নিশ্চিত করেছেন যে, ইসরায়েলে একজন নারী নিহত এবং প্রায় ৪০ জনের মতো মানুষ আহত হয়েছেন। নিউ ইয়র্ক টাইমসও একজন নিহতের খবর প্রকাশ করেছে, ইসরায়েলি পুলিশের এক মুখপাত্রের বরাত দিয়ে তারা জানিয়েছে যে, শুক্রবার (১৩ জুন) রাতে তেল আবিবের কাছে একটি শহরতলিতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর ওই নারীকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, শুক্রবার (১৩ জুন) রাতে ইরান তিন ধাপে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এর মধ্যে কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি ইসরায়েলের বাণিজ্যিক রাজধানী তেল আবিবে আঘাত হানে। এতে অন্তত ৪৮ জন আহত হয়েছেন বলে আল জাজিরা দাবি করেছে। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, নিহত নারী ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত হয়েছিলেন এবং হাসপাতালে নেওয়ার পর তার মৃত্যু হয়। আহতদের মধ্যে অন্তত দুজনের অবস্থা গুরুতর বলে জানা গেছে।
ইরান ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে কয়েকশ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। এর মধ্যে কিছু ক্ষেপণাস্ত্র যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা ইসরায়েলে পৌঁছানোর আগেই ভূপাতিত করেছে বলে দাবি করা হয়েছে। এই হামলার পর ইরান কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছে যে, যেসব দেশ ইরানের হামলা ঠেকানোর চেষ্টা করবে, এই অঞ্চলে তাদের অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা চালানো হবে। মূলত যুক্তরাষ্ট্রকে উদ্দেশ্য করেই তেহরান এই বার্তা দিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে, ইসরায়েলে ইরানের রাতভর হামলার পর শনিবার (১৪ জুন) সকালে ইসরায়েল পাল্টা আঘাত হেনেছে বলে আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। দেশটির রাজধানী তেহরানের মেহরাবাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অন্তত দুটি ড্রোন অথবা ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে। এই হামলার পরপরই বিমানবন্দরটিতে বড় আকারের আগুন দেখা যায়।
এই পাল্টাপাল্টি হামলা মধ্যপ্রাচ্যে এক ভয়াবহ যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করেছে। এই সংঘাতের পরবর্তী ধাপ কী হবে, তা নিয়ে বিশ্বজুড়ে চরম উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে।