
মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল-ইরান সংঘাতের প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য হস্তক্ষেপ পরিস্থিতিকে ‘আরেকটি ভয়াবহ উত্তেজনার দিকে নিয়ে যাবে’ বলে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে রাশিয়া। বৃহস্পতিবার রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা তাসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এই মন্তব্য করে আন্তর্জাতিক সম্পর্কে মস্কোর উদ্বেগের বিষয়টি স্পষ্ট করেছেন।
বর্তমানে এই সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়া দৃশ্যত দুই বিপরীত পক্ষকে সমর্থন করছে। যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (পুনরায় নির্বাচিত হলে) ইরানের কাছে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ এবং তাদের বিরুদ্ধে হামলার কথা বিবেচনা করছেন, সেখানে মস্কো তেহরানকে তাদের এক গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত মিত্র হিসেবেই দেখছে।
চলতি বছরের শুরুর দিকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত অংশীদারিত্ব চুক্তি স্বাক্ষর করেন। এই চুক্তিতে উভয় দেশ প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে তাদের গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেছে, যা মস্কো-তেহরান অক্ষের গুরুত্বকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। উল্লেখ্য, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধে ইরান মস্কোকে ‘শাহেদ ড্রোন’ সরবরাহ করেছে, যা রুশ সামরিক কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
ইরানের উপর ইসরায়েলের যেকোনো হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, এই পদক্ষেপকে তারা ‘উস্কানিমূলক’ বলেও উল্লেখ করেছে। পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে করে, বুধবার ইসরায়েলকে সামরিক সহায়তা না দেওয়ার জন্য আমেরিকাকে সরাসরি সতর্ক করেছেন রাশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভ।
রিয়াবকভ স্পষ্ট করে বলেন, “এটি নাটকীয়ভাবে পুরো পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করবে।” তিনি আরও যোগ করেন, এমন একটি প্রেক্ষাপট ইসরায়েল-ইরান সংকট নিয়ে মস্কো এবং ওয়াশিংটনকে সরাসরি সংঘর্ষের পথে ঠেলে দিচ্ছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প পুনরায় নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে রাশিয়া-মার্কিন সম্পর্কের উন্নতির ক্ষেত্রে এই মধ্যপ্রাচ্য সংকট একটি বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। এই ঘটনা বিশ্ব রাজনীতিতে শক্তিধর দেশগুলোর মধ্যে নতুন করে মেরুকরণের ইঙ্গিত দিচ্ছে, যেখানে মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাত বৈশ্বিক নিরাপত্তার জন্য এক নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে।
সূত্র: বিবিসি।