
যখন ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে টানা তৃতীয় দিনের মতো ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ও পাল্টা হামলায় মধ্যপ্রাচ্য উত্তপ্ত, তখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি মন্তব্য নতুন জল্পনার জন্ম দিয়েছে। তিনি বলেছেন, চলমান সংঘাতের অবসানে ইরান ও ইসরায়েল শিগগিরই ‘একটি চুক্তিতে পৌঁছাবে’। রবিবার নিজের প্রতিষ্ঠিত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ স্যোশালে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প এই মন্তব্য করেছেন, যেখানে তিনি শান্তি ফিরে আসার আশা প্রকাশ করেছেন।
গত তিন দিন ধরে চলা ইসরায়েল ও ইরানের পাল্টাপাল্টি হামলায় উভয় দেশে প্রায় দেড় শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। এই পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ। ট্রুথ স্যোশালে তিনি লিখেছেন, “ইরান ও ইসরায়েলকে একটি চুক্তি করতে হবে এবং তারা চুক্তি করবে। আমরা শিগগিরই শান্তি ফিরে পাবো।” তবে, এই সংঘাত বন্ধে বর্তমানে যে অনানুষ্ঠানিক বৈঠকগুলো চলছে, বা শান্তিমূলক পদক্ষেপের অগ্রগতি সম্পর্কে কোনো বিস্তারিত তথ্য দেননি মার্কিন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট।
তবে, যুদ্ধ বন্ধে ট্রাম্পের আশাবাদ ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সাম্প্রতিক বক্তব্যের সঙ্গে সরাসরি সাংঘর্ষিক। শনিবার নেতানিয়াহু স্পষ্ট জানিয়েছিলেন যে, ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের অভিযান আরও তীব্র হবে। এই দুই বিপরীতধর্মী মন্তব্য পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
অন্যদিকে, হোয়াইট হাউসের একজন মুখপাত্র এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি যে, ডোনাল্ড ট্রাম্প বা হোয়াইট হাউস কীভাবে ইরান-ইসরায়েলের চলমান উত্তেজনা হ্রাসে কাজ করছে। তাদের এই নীরবতা ট্রাম্পের বক্তব্যের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেকে শান্তির দূত হিসেবে দাবি করলেও, ইসরায়েল-ইরান সংঘাত রোধে ব্যর্থ হওয়ার জন্য তার রাজনৈতিক অনুসারীদের কাছে সমালোচিত হয়েছেন। এর আগেও তিনি ভারত ও পাকিস্তানের মতো অন্যান্য বিরোধের সমাধানের দায়িত্ব নিয়েছিলেন এবং সেই প্রচেষ্টার জন্য যথেষ্ট প্রশংসা না পাওয়ায় পরবর্তীতে দুঃখ প্রকাশ করেন।
ট্রুথ স্যোশালে নিজের অতৃপ্তি প্রকাশ করে মার্কিন এই প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট লিখেছেন, “আমি অনেক কিছু করি। কিন্তু কখনও কৃতিত্ব পাই না। তারপরও জনগণ বুঝতে পারে। মেইক দ্য মিডল ইস্ট গ্রেট অ্যাগেইন!”
এই পরিস্থিতিতে, যখন মধ্যপ্রাচ্যের আকাশে সংঘাতের মেঘ ঘনিয়ে আসছে, তখন ট্রাম্পের এই মন্তব্য কতটা প্রভাব ফেলে এবং ইরান ও ইসরায়েল সত্যিই কোনো চুক্তিতে পৌঁছায় কিনা, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
সূত্র: রয়টার্স।