
মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি চরম উত্তপ্ত। শুক্রবার ইসরায়েলের হামলার পর এবার শনিবার (১৪ জুন) রাতে ইরানের রাজধানী তেহরানের শাহরান তেল ডিপোতে ভয়াবহ বিমান হামলা চালিয়েছে দখলদার ইসরায়েল। এই হামলার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গেছে, বিশাল তেল ডিপোটিতে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে, যা পরিস্থিতির ভয়াবহতা তুলে ধরছে।
ইরানি সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, দখলদার ইসরায়েলের বিমানবাহিনী এই হামলাটি চালিয়েছে। ইসরায়েলের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত এই হামলার বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য আসেনি। তবে ইরানের তেল মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তেল ডিপোটিতে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে, যা ক্ষতির মাত্রা কিছুটা সীমিত করতে সহায়ক হবে বলে মনে করা হচ্ছে। তেহরানের অভ্যন্তরে এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ তেল স্থাপনায় হামলা ইরানের জন্য বড় ধাক্কা এবং এটি সংঘাতকে এক নতুন বিপজ্জনক স্তরে নিয়ে গেল।
এদিকে, ইসরায়েল যখন শাহরান তেল ডিপোতে হামলা চালায়, ঠিক তখনই ইরানও থেমে থাকেনি। গতকাল শনিবার রাতে ইসরায়েলের বন্দর নগরী হাইফাকে লক্ষ্য করে কয়েক ডজন ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইরান। ধারণা করা হচ্ছে, এই হামলার প্রধান লক্ষ্য ছিল হাইফার গুরুত্বপূর্ণ তেল পরিশোধনাগার। হাইফার একটি এলাকায় হামলার পর বড় ধরনের আগুন লাগার খবর পাওয়া গেছে, যা তেল পরিশোধনাগারেই আঘাত হেনেছে বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে।
ইরানের এই পাল্টা হামলায় এক ইসরায়েলি নারী নিহত হয়েছেন এবং অন্তত ১৪ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। ইসরায়েল এখনও হাইফায় হামলার সম্পূর্ণ তথ্য প্রকাশ করেনি, তবে হতাহতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে এই হামলা-পাল্টা হামলার জেরে মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের দামামা আরও স্পষ্ট হচ্ছে। উভয় পক্ষই একে অপরের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও শহরে আঘাত হানছে, যা সাধারণ মানুষের মনে চরম আতঙ্ক তৈরি করেছে। আন্তর্জাতিক মহল এই সংঘাত বন্ধের আহ্বান জানালেও, দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা কমার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। এই পরিস্থিতি বিশ্বজুড়ে জ্বালানি বাজার এবং ভূ-রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর গভীর প্রভাব ফেলবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।