মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের দামামা বেজে উঠেছে। ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর বিশ্বজুড়ে যখন তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে, ঠিক তখনই এক বিস্ফোরক মন্তব্য করে পরিস্থিতিকে আরও ঘোলাটে করে তুললেন প্রখ্যাত প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ প্রফুল্ল বক্সী। তার মন্তব্য, “আমেরিকা তার শিকার খুঁজে পেয়ে গিয়েছে।” একইসাথে তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন যে, “আমেরিকা ইরানের হাল ইরাকের মত করে ছাড়বে।”
প্রফুল্ল বক্সীর এই মন্তব্য আন্তর্জাতিক মহলে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। তার কথা সরাসরি ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপের চূড়ান্ত পরিণতি হতে পারে ইরানের শাসন ব্যবস্থার পতন এবং দেশটির সম্পূর্ণ ধ্বংস, যা ইরাকের ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছিল।
“আমেরিকা তার শিকার খুঁজে পেয়েছে”: বক্সীর গভীর বিশ্লেষণ
প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ হিসেবে প্রফুল্ল বক্সীর পর্যবেক্ষণ যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দিতে চেয়েছেন যে, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে অজুহাত করে আমেরিকা কার্যত তেহরানকে তাদের পরবর্তী সামরিক লক্ষবস্তুতে পরিণত করেছে। তার এই মন্তব্য আমেরিকার আগ্রাসী পররাষ্ট্রনীতির একটি চরম বিশ্লেষণ তুলে ধরে।
“ইরানের হাল হবে ইরাকের মতো”: এক ভয়াবহ সতর্কবার্তা
ইরাকের ক্ষেত্রে যেমন আমেরিকা ‘গণবিধ্বংসী অস্ত্র’র অজুহাত তুলে হামলা চালিয়েছিল এবং পরবর্তীতে সাদ্দাম হোসেনের সরকারের পতন ঘটিয়েছিল, প্রফুল্ল বক্সী আশঙ্কা করছেন ইরানের ক্ষেত্রেও একই চিত্র দেখা যেতে পারে। তিনি মনে করেন, মার্কিন হামলার মূল লক্ষ্য ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা ধ্বংসের চেয়েও বেশি কিছু – সম্ভবত শাসন পরিবর্তন এবং মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের প্রভাব আরও জোরদার করা। এই ধরনের পরিণাম ঘটলে ইরানে চরম অস্থিতিশীলতা, গৃহযুদ্ধ এবং আঞ্চলিক সংঘাতের এক নতুন অধ্যায় শুরু হতে পারে।
তার এই সতর্কবার্তা এমন এক সময়ে এলো, যখন ইরান ইতিমধ্যেই মার্কিন হামলার কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে এবং প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে যে, এই অঞ্চলের প্রতিটি মার্কিন নাগরিক ও সেনা এখন তাদের ‘টার্গেট’।
প্রফুল্ল বক্সীর এই তীক্ষ্ণ বিশ্লেষণ মধ্যপ্রাচ্যের ভবিষ্যৎ নিয়ে এক গভীর উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। তার মন্তব্যগুলি ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের প্রেক্ষাপটে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ কেবল একটি সীমিত সামরিক অভিযান নয়, বরং এটি একটি বৃহত্তর ভূ-রাজনৈতিক খেলার অংশ, যার পরিণতি হতে পারে অত্যন্ত বিধ্বংসী।
