
ইসরায়েল এবং ইরানের মধ্যে সামরিক সংঘাতের তীব্রতা আরও বাড়লো। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার পর তেহরান এবার সরাসরি ইসরায়েলের ওপর নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েলজুড়ে বিস্তৃত লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানা হয়েছে এবং এই হামলার জেরে জেরুজালেম, তেল আবিব ও হাইফায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। আল জাজিরা রবিবার এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ইরান থেকে দুটি দফায় মোট ২৭টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে। প্রথম দফায় ২২টি এবং দ্বিতীয় দফায় ৫টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়। এই হামলা ছিল অত্যন্ত বিস্তৃত। সিরিয়ার দখলীকৃত গোলান হাইটস অঞ্চল থেকে শুরু করে আপার গ্যালিলি, এমনকি উত্তর ও মধ্য উপকূলীয় এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত অংশে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে।
আল জাজিরার তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের অন্তত ১০টি ভিন্ন স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি বা বড় আকারের শার্পনেলের আঘাতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে তেল আবিব এবং হাইফা শহরে ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা বেশি। প্রাথমিকভাবে ঠিক কোন ধরনের ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ইসরায়েলের মেডিকেল সার্ভিস জানিয়েছে, এই হামলায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন আহত হতে পারে। চিকিৎসা দলগুলো এখনো ঘটনাস্থলে তল্লাশি চালাচ্ছে যেন কোনো আহত ব্যক্তি চিকিৎসাবঞ্চিত না থাকে। জেরুজালেম থেকেও একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে বলে জানিয়েছেন বিবিসির মধ্যপ্রাচ্য সংবাদদাতা হুগো বাছেগা। ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সতর্কবার্তার পরপরই এসব বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।
এই হামলা মধ্যপ্রাচ্যে বিদ্যমান উত্তেজনাকে এক নতুন ও বিপজ্জনক মাত্রায় পৌঁছে দিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালানোর পর তেহরান থেকে বারবার প্রতিশোধের হুঁশিয়ারি আসছিল। সেই হুঁশিয়ারিকেই বাস্তবে রূপ দিল ইরানের এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা।
এখন আন্তর্জাতিক মহলের নজর ইরানের পরবর্তী পদক্ষেপ এবং ইসরায়েলের সম্ভাব্য পাল্টা প্রতিক্রিয়ার দিকে। এই সংঘাত আরও তীব্র হলে তা আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য মারাত্মক হুমকি হতে পারে।