
কেন্দ্রীয় জন কৃত্যক আয়োগ (UPSC)-এর নতুন অধ্যক্ষ হিসেবে বৃহস্পতিবার (আজ) পদ এবং গোপনীয়তা রক্ষার শপথ নিলেন প্রাক্তন প্রতিরক্ষা সচিব ডঃ অজয় কুমার। ইউপিএসসি-র প্রবীণ সদস্য অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাজ শুক্লা তাঁকে এই শপথবাক্য পাঠ করান। বৃহস্পতিবার প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো (PIB) এক বিবৃতির মাধ্যমে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
ডঃ অজয় কুমারের শিক্ষাজীবন:
অত্যন্ত সমৃদ্ধ শিক্ষাজীবনের অধিকারী ডঃ অজয় কুমার ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (IIT), কানপুর থেকে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে বি-টেক ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফলিত অর্থনীতিতে এমএস এবং একই বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্লসন স্কুল অফ ম্যানেজমেন্ট থেকে বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে পিএইচডি সম্পন্ন করেন। ২০১৯ সালে অ্যামেটি ইউনিভার্সিটি তাঁকে সাম্মানিক ‘ডক্টর অফ ফিলোজফি’ উপাধিতে ভূষিত করে।
কর্মজীবনের ব্যাপ্তি:
ডঃ অজয় কুমার ১৯৮৫ সালের কেরল ক্যাডারের একজন ইন্ডিয়ান অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস (IAS) অফিসার। ৩৫ বছরের বেশি কর্মবহুল জীবনে তিনি কেরল রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। কেরলে থাকাকালীন তিনি ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি দফতরের ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং তথ্য প্রযুক্তি দফতরের প্রধান সচিবের মতো দায়িত্ব সামলেছেন। কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন দফতরে তিনি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দফতরের অধিকর্তা, যোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রকের প্রধান সচিব, ন্যাশনাল ইনফরমেটিক্স সেন্টারের মহানির্দেশক এবং ইলেকট্রনিক্স ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রকের অতিরিক্ত সচিবের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করেছেন। প্রতিরক্ষা দফতরের সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন শেষে তিনি অবসর গ্রহণ করেন।
ই-গভর্নেন্সে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা:
ভারতের ই-গভর্নেন্স ক্ষেত্রকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে ডঃ অজয় কুমারের উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। ‘জীবন প্রমাণ’, ‘মাই গভ’, ‘প্রগতি’, ‘বায়োমেট্রিক অ্যাটেনডেন্স সিস্টেম’, এইমস-এর বহির্বিভাগে নথিভুক্তি ব্যবস্থা এবং ক্লাউড পরিষেবা প্রদানের উদ্দেশ্যে সরকারের জন্য ‘ক্লাউড ফার্স্ট নীতি’ -এর মতো একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ই-গভর্নেন্স উদ্যোগের সূচনায় তিনি অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিলেন।
পুরস্কার ও সম্মান:
ডঃ অজয় কুমারের বহু গবেষণামূলক প্রবন্ধ বিভিন্ন জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে। কর্মজীবনে তিনি একাধিক পুরস্কার ও সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে ১৯৯৪ সালে ন্যাশনাল স্কাউটস অ্যান্ড গাইডস-এর ‘সিলভার এলিফ্যান্ট’ পদক, দেশে ইলেকট্রনিক্স শিল্পের প্রসারের জন্য ২০১২ সালে ‘ইলেকট্রনিক্স লিডার অফ দ্য ইয়ার’ সম্মান, ২০১৫ সালে ইন্ডিয়া ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড সেমিকন্ডাকটর অ্যাসোসিয়েশনের ‘টেকনোভেশন সারাভাই পুরস্কার’ এবং ২০১৭ সালে কনজিউমার ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড অ্যাপ্লায়েন্সেস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের দেওয়া ‘চ্যাম্পিয়ন অফ চেঞ্জ’ সম্মান।