“আলিয়া, কলকাতা চুপ থাকবে না”- যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় দখল নিয়ে হুঁশিয়ারি নওশাদ সিদ্দিকীর

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত পড়ুয়াদের সমর্থনে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন ভাঙড়ের বিধায়ক তথা আইএসএফ নেতা নওশাদ সিদ্দিকি। সম্প্রতি কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্রের এক মন্তব্যের জবাবে নওশাদ বলেন, “যাদবপুরকে কেউ ক্ষমতা দেখাতে এলে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়—আলিয়া, কলকাতা—এরা কেউ চুপ বসে থাকবে না।” এদিন তিনি আরও জানান, বিধায়ক তহবিল (MLALAD) থেকে অর্থ খরচ করতে না পারায় ভাঙড়ের উন্নয়ন কাজ থমকে রয়েছে। এই অভিযোগ নিয়ে সোমবার নওশাদ নবান্নে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেন। প্রায় ২৫ মিনিট ধরে চলে এই বৈঠক।

যাদবপুরের পড়ুয়াদের পাশে নওশাদ
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে নওশাদ বলেন, “যাদবপুর শুধু নয়, পশ্চিমবঙ্গে ছাত্রসমাজ আছে। বলপ্রয়োগ করতে যাবেন না, হিতে বিপরীত হবে। ক্ষমতা দেখিয়ে কোনও সমস্যার সমাধান হয় না। আলোচনায় বসে সমাধান হবে।” শাসক দলকে আক্রমণ করে তিনি আরও বলেন, “আলিয়া, কলকাতা, প্রেসিডেন্সি, বিদ্যাসাগর—সমস্ত ছাত্রসমাজ ক্ষমতা দেখাবে। যে সমস্ত নেতারা ক্ষমতা দেখানোর কথা বলছেন, পুলিশ ছাড়া ঘরের বাইরে বের হতে পারবেন?”

সম্প্রতি মদন মিত্র বলেছিলেন, “যাদবপুরে বিচ্ছিন্নতাবাদী রাজনৈতিক দেশবিরোধী দলের আখড়া ছিল প্রথম থেকেই… যেখানে বাক্যবল প্রয়োগে সেখানে বাহুবল প্রয়োগই উৎকৃষ্ট দাওয়াই।” এই মন্তব্যের পাল্টা জবাব দিয়ে নওশাদ শাসক দলের এই অবস্থানের তীব্র সমালোচনা করেন।

MLALAD তহবিল নিয়ে অভিযোগ
সোমবার হঠাৎ নবান্নে পৌঁছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেন নওশাদ। বৈঠকের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি জানান, দীর্ঘদিন ধরে তাঁর বিধায়ক তহবিলের টাকা খরচ করতে দেওয়া হচ্ছে না। এর ফলে ভাঙড়ের উন্নয়ন কাজ ব্যাহত হচ্ছে। নওশাদ বলেন, “বিধানসভাতেও এই বিষয়টি তুলেছিলাম যে এমএলএ ল্যাডের টাকা পঞ্চায়েত সমিতি খরচ করছে না। ফেলে রাখছে। তাতে সাধারণ মানুষেরই ক্ষতি হচ্ছে।”

বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তিনি নিজের অভিযোগ তুলে ধরেন। নওশাদ জানান, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে সবরকম সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। তবে এই বিষয়ে শাসক দলের তরফে এখনও কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য
নওশাদের এই হুঁশিয়ারি এবং নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক রাজনৈতিক মহলে নতুন জল্পনার জন্ম দিয়েছে। একদিকে যাদবপুরের পড়ুয়াদের সমর্থন করে শাসক দলের বিরুদ্ধে তাঁর সরব হওয়া, অন্যদিকে MLALAD তহবিল নিয়ে অভিযোগ—এই দুই ইস্যুতে নওশাদের অবস্থান স্পষ্ট। ভাঙড়ের উন্নয়ন ও ছাত্র আন্দোলনের প্রশ্নে তিনি কঠোরভাবে নিজের মত প্রকাশ করছেন। এখন দেখার, এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শাসক দল ও সরকার কী পদক্ষেপ নেয়।

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy