
জম্মু ও কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদ দমনে ভারতীয় সেনার অভিযানে আবারও বড় সাফল্য মিলেছে। বৃহস্পতিবার সকালে পুলওয়ামা জেলার ত্রাল এলাকায় এক এনকাউন্টারে জৈশ-ই-মহম্মদ জঙ্গি গোষ্ঠীর ওয়ান্টেড জঙ্গি আমির নাজ়ির ওয়ানি নিকেশ হয়েছে। কিন্তু এই ঘটনার ঠিক আগে তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া এক মর্মান্তিক দৃশ্য সামনে এসেছে, যেখানে ছেলের প্রাণ বাঁচাতে মা বার বার আত্মসমর্পণের অনুরোধ করলেও জঙ্গি আমির তা উপেক্ষা করে নিজের ভয়ঙ্কর পরিণতি ডেকে আনে।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকালে ত্রাল এলাকায় জৈশ-ই-মহম্মদের তিন জঙ্গির লুকিয়ে থাকার খবর পেয়ে অভিযান চালায় সেনাবাহিনী। কিছুক্ষণের গুলির লড়াইয়ের পরেই তিন জঙ্গিকে খতম করা হয়। নিকেশ হওয়া তিন জঙ্গির মধ্যে পুলওয়ামার বাসিন্দা আমির নাজ়ির ওয়ানি ছিল অন্যতম। জৈশ-ই-মহম্মদ-এর সঙ্গে যুক্ত আমির একাধিক সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে জড়িত থাকার কারণে সেনার ওয়ান্টেড তালিকায় ছিল। পহেলগাম হামলার পর থেকে সে গা-ঢাকা দিয়ে ছিল।
সেনা সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার সকালে নাদির গ্রামে নিজের লুকোনোর জায়গা থেকেই মা’কে ভিডিয়ো কল করেছিল আমির। ভয়ঙ্কর কিছু হতে চলেছে আগেই টের পেয়েছিলেন তার মা। তাই ছেলের প্রাণ বাঁচাতে, শেষবারের মতো বার বার সেনার কাছে আত্মসমর্পণ করার জন্য আকুতি জানান তিনি। যাতে তার ছেলে মূলস্রোতে ফিরে আসতে পারে। কিন্তু সন্ত্রাস ছড়ানোর শিক্ষা যার রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছড়িয়ে মায়ের কান্নাও তাকে স্পর্শ করতে পারেনি।
মায়ের আকুতি অগ্রাহ্য করে ওয়ানি AK-47 উঁচিয়ে মাকে পাল্টা উত্তর দিয়েছিল, ‘আর্মি আসুক না, আমি দেখে নেব…।’ তার সঙ্গে থাকা আরও এক জঙ্গির বোনের সঙ্গেও সে সময়ে কথা বলে আমির। মায়ের কান্না এবং আকুতির মুখে জঙ্গির এই ধরনের ঔদ্ধত্যপূর্ণ জবাব মর্মান্তিক বলে মনে করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, পহেলগাম ঘটনার পরই জম্মু-কাশ্মীরকে সন্ত্রাসমুক্ত করতে ব্যাপক অভিযানে নেমেছে ভারতীয় সেনা। গত ৪৮ ঘণ্টায় এই নিয়ে ভূস্বর্গে এটি দ্বিতীয় এনকাউন্টার। মঙ্গলবার সকালেই কাশ্মীরের সোপিয়ান জেলার কেলারে তিন লস্কর-ই-তৈবার সদস্যকে খতম করেছিল বাহিনী। আজ ত্রালের নাদির গ্রামে জৈশ সদস্যদের লুকিয়ে থাকার খবর পেয়েই নির্দিষ্ট ডেরার দরজায় পৌঁছে যায় সেনা এবং শুরু হয় গুলির লড়াই। এই এনকাউন্টারে আমির নাজ়ির ওয়ানি-সহ তিন জৈশ জঙ্গি খতম হয়।
মায়ের আকুতি অগ্রাহ্য করে সন্ত্রাসের পথ বেছে নেওয়া আমির নাজ়ির ওয়ানির পরিণতি হলো সেনার গুলিতে নিকেশ হওয়া। ভারতীয় সেনাবাহিনীর এই ধারাবাহিক অভিযান উপত্যকা থেকে সন্ত্রাস নির্মূল করার লক্ষ্যেই পরিচালিত হচ্ছে।