“আমেরিকার হামলায় কিচ্ছু হয়নি”-দাবি ইরানের, জানাল, ‘পরমাণু’ নিয়ে আমাদের কাজ চলবে

নদিয়ার হাঁসখালিতে এক স্তম্ভিত করে দেওয়া ঘটনা ঘটেছে। এক কলেজছাত্রী জীবিত থাকা সত্ত্বেও তার পরিবার রীতিমতো শ্রাদ্ধানুষ্ঠান সম্পন্ন করেছে। কারণ? পরিবারের অমতে ভিন্ন ধর্মাবলম্বী এক যুবককে বিয়ে। এই চরম পদক্ষেপের মাধ্যমে পরিবার তাদের প্রাপ্তবয়স্ক মেয়ের সাথে সব সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দিয়েছে, যা সমাজে তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি করেছে।

ঘটনার সূত্রপাত গত মঙ্গলবার, ১৭ই জুন। হাঁসখালি এলাকার গাজনা উত্তরপাড়ার ওই কলেজছাত্রী সেদিন গভীর রাতে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। পরিবারের অভিযোগ, তিনি একজন মুসলিম যুবককে বিয়ে করেছেন। এই ভিনধর্মী বিবাহ কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেনি পরিবার। সেই রাগের বশেই, তারা জীবিত মেয়ের শ্রাদ্ধ করার মতো নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত নেয়। বাড়িতে পুরোহিত ডেকে, মেয়ের ছবিতে মালা পরিয়ে এবং রীতি মেনে শাস্ত্রীয় পূজা-অর্চনা করে শ্রাদ্ধের কাজ সম্পন্ন করা হয়।

পরিবারের যন্ত্রণার বহিঃপ্রকাশ
ছাত্রীর কাকা এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমার ভাইঝি প্রেমে পড়ে ফেব্রুয়ারি মাসেই বাড়ি ছেড়ে ওই ছেলেটার সঙ্গে চলে গিয়েছিল। ছেলেটা অন্য ধর্মের, তার উপর বিবাহিত।” তিনি জানান, “কিছু দিন পর আমরা ওকে বুঝিয়েসুজিয়ে বাড়ি ফিরিয়ে এনেছিলাম। মাস তিনেক ও বাড়িতেই ছিল। কিন্তু মঙ্গলবার রাতে আমার ভাইঝি আবার পালাল ওই ছেলেটার সঙ্গে। শুনেছি, ওকেই ভাইঝি বিয়ে করেছে।”

কাকার কথায় তাদের কষ্ট স্পষ্ট হয়ে ওঠে, “মেয়ে আমাদের সবার খুব প্রিয় ছিল। আর আমার তো খুবই আদরের। কিন্তু এত বার আমরা সবাই মিলে বোঝানোর পরেও ও যা করল, সেটা আমরা কেউই মেনে নিতে পারছি না। সবাই আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, ওর সঙ্গে আর কোনও সম্পর্ক আমাদের নেই। তাই, সামাজিক প্রথা মেনে পুরোহিত ডেকে নিজে নেড়া হয়ে ওর শ্রাদ্ধশান্তি করেছি।”

জীবিত মেয়ের শ্রাদ্ধ করার কষ্ট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বুকে কেউ পাথর দিয়ে ধাক্কা দিলে যেমন হয়, সে রকম কষ্ট হয়েছে।” তবে তাদের সিদ্ধান্ত অটল, “যদি কোনও দিন বাড়িতে ফিরেও আসতে চায়, তা হলে আমরা ওর জন্য বাড়ির দরজা খুলব না।” ছাত্রীর এক কাকিমা কান্নারত অবস্থাতেও বলেন, “আমাদের ভালবাসা, বিশ্বাসে ও চরম আঘাত দিয়েছে। তাই, ও যাতে আর এ বাড়িতে ফিরতে না–পারে, তার জন্য ওর শ্রাদ্ধ করা হলো।” মেয়ের মা-ও কাঁদতে কাঁদতে মেয়ের ‘অন্যায়’ মেনে নিতে না পারার কথা জানান।

পিতার অসুস্থতা ও নিরবচ্ছিন্ন সিদ্ধান্ত
জানা গেছে, ওই কলেজছাত্রীর বাবা বর্তমানে কর্মসূত্রে ইসরায়েলে আছেন এবং সেখানে যুদ্ধের পরিস্থিতির মধ্যেই অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। এই শ্রাদ্ধের বিষয়ে অসুস্থ বাবাকে কিছু জানানো হয়নি।

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy