
গত কয়েকদিন ধরে ইরান এবং ইসরায়েলের মধ্যে হামলা-পাল্টা হামলায় মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি চরম উত্তপ্ত। শুক্রবার ভোরে ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনাগুলোতে ইসরায়েলের বিমান হামলার পর তেহরানও তীব্র শক্তি নিয়ে ইসরায়েলে পাল্টা হামলা চালিয়েছে। এমন এক বিস্ফোরক পরিস্থিতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্য নতুন মাত্রা যোগ করেছে, যেখানে তিনি এই হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সম্পর্ক অস্বীকার করার পাশাপাশি তেহরানকে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
আল জাজিরার খবর অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রোববার (১৫ জুন) ‘ট্রুথ সোশ্যাল’ নামের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে বলেছেন, ইরানে সাম্প্রতিক হামলার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তবে একইসঙ্গে তিনি কড়া বার্তা দিয়ে সতর্ক করেছেন, “যদি ইরান যুক্তরাষ্ট্রকে যেকোনোভাবে আক্রমণ করে, তাহলে মার্কিন সেনাবাহিনী এমন শক্তি ও মাত্রায় প্রতিশোধ নেবে— যা আগে কখনও দেখা যায়নি।”
ট্রাম্প তার পোস্টে আরও উল্লেখ করেন, “তবে চাইলেই আমরা ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সহজেই একটা চুক্তি করাতে পারি এবং এই রক্তক্ষয়ী সংঘাতের অবসান ঘটাতে পারি!!!” তার এই মন্তব্য এমন এক সময়ে এলো যখন ইসরায়েল এবং ইরানের মধ্যে সরাসরি সামরিক সংঘর্ষ চলছে। ইসরায়েল ইরানের পরমাণু স্থাপনায় আঘাত হানার পর ইরানও পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলে।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র এই সংঘাতে সরাসরি জড়ায়নি। তবে তারা আঞ্চলিক মিত্রদের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রাখছে এবং মধ্যপ্রাচ্যে তাদের সামরিক প্রস্তুতিও জোরদার করেছে। ট্রাম্পের এই মন্তব্য একদিকে যেমন ইরানের প্রতি একটি কড়া বার্তা, তেমনি মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ফেরাতে যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য মধ্যস্থতার ইঙ্গিতও বহন করছে।
এই মুহূর্তে গোটা বিশ্ব তাকিয়ে আছে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে। একদিকে হামলা-পাল্টা হামলার উন্মাদনা, অন্যদিকে পরাশক্তিগুলোর অবস্থান — সব মিলিয়ে পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল। ট্রাম্পের এই ‘চুক্তি’র প্রস্তাব আদৌ কতটা কার্যকর হবে এবং মধ্যপ্রাচ্যের এই আগুন কতটা ছড়াবে, সেটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।