মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা নতুন মাত্রা পাচ্ছে। দখলদার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে ইরানে হামলা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বুধবার (১৮ জুন) হোয়াইট হাউজের বাইরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প এই চাঞ্চল্যকর মন্তব্য করেন, যা আঞ্চলিক অস্থিরতা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সাংবাদিকরা ট্রাম্পকে যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত নেতানিয়াহুকে তিনি কী বলেছেন জানতে চাইলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, “আমি তাকে বলেছি, হামলা চালিয়ে যেতে। আমি তার সঙ্গে প্রতিদিন কথা বলি। নেতানিয়াহু ভালো মানুষ। অনেক কিছু করছে।” ট্রাম্প নিশ্চিত করেন যে, মঙ্গলবারই তিনি নেতানিয়াহুর সঙ্গে সর্বশেষ কথা বলেছেন।
ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য হামলা: ট্রাম্পের রহস্যময় মন্তব্য
ইসরায়েলের আহ্বানে সাড়া দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ইরানে হামলা চালাতে পারে এমন জল্পনা যখন তুঙ্গে, তখন এই বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প এক রহস্যময় অবস্থান নেন। তিনি বলেন, “আমি এটি বলতে পারব না… আপনি ভাববেন না আমি এ প্রশ্নের উত্তর দেব।”
ট্রাম্প তার মন্তব্যকে আরও রহস্যময় করে তুলে বলেন, “আপনি জানেন না আমি এটি (হামলা) করবই কি না। আপনি জানেন না। আমি হামলা করতে পারি। আমি হামলা নাও করতে পারি। আমি বোঝাচ্ছি, কেউ জানে না আমি কী করতে যাচ্ছি।” এই মন্তব্য বিশ্বজুড়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য সামরিক পদক্ষেপ নিয়ে ব্যাপক অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে।
ইরানকে আলোচনার প্রস্তাব, তবে শর্তসাপেক্ষে?
তবে, সামরিক পদক্ষেপের বিষয়ে ধোঁয়াশা রেখেও ট্রাম্প ইরানের সঙ্গে আলোচনার সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি বলেন, “আমি আপনাকে বলতে পারি— ইরান অনেক সমস্যায় আছে এবং তারা আলোচনা করতে চায়। আমি তাদের বলেছি, তাহলে কেন আগে আলোচনা করেননি। আমি বলেছি, কেন দুই সপ্তাহ আগে আলোচনা করেননি। আগে আলোচনা করলে আপনারা ভালো করতেন। আপনাদের দেশ থাকত।”
ট্রাম্পের এই মন্তব্য একদিকে যেমন ইরানের উপর চাপ সৃষ্টি করছে, অন্যদিকে আলোচনার দরজা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ নয় এমন ইঙ্গিতও দিচ্ছে। তবে, তাঁর শর্তসাপেক্ষ আলোচনার প্রস্তাব এবং একইসাথে নেতানিয়াহুকে ‘হামলা চালিয়ে যাওয়ার’ বার্তা মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ট্রাম্পের এই কৌশলগত অবস্থান আঞ্চলিক ক্ষমতা সমীকরণে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।
