“আমি চাই… কিম জং উনের সঙ্গে..?.”-কিমের সম্পর্ক নিয়ে স্পষ্ট বার্তা দিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে তার এখনো ভালো সম্পর্ক রয়েছে। সেই সঙ্গে তিনি উত্তর কোরিয়াকে আবারো ‘পারমাণবিক শক্তিধর’ দেশ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুটের সঙ্গে ওভাল অফিসে বৈঠকের সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এই মন্তব্য করেন।

ট্রাম্পকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, কিম জং উনের সঙ্গে তার সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা। জবাবে তিনি বলেন, ‘‘আমি চাই… কিম জং উনের সঙ্গে আমার একটি দুর্দান্ত সম্পর্ক রয়েছে। দেখা যাক কী হয়, তবে অবশ্যই তিনি একজন পারমাণবিক শক্তিধর।’’ গত ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর এটিই প্রথমবার যখন ট্রাম্প উত্তর কোরিয়াকে ‘পারমাণবিক শক্তিধর’ দেশ হিসেবে আখ্যায়িত করলেন।

ট্রাম্পের এই মন্তব্য উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে মার্কিন নীতিতে কোনো পরিবর্তন আনে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তবে হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা জানান, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প উত্তর কোরিয়ার সম্পূর্ণ পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের চেষ্টা চালিয়ে যাবেন, ঠিক যেমনটি তিনি তার প্রথম মেয়াদে করেছিলেন।

উল্লেখ্য, ট্রাম্প তার প্রথম প্রেসিডেন্সির সময় উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে তিনটি ঐতিহাসিক সম্মেলনে অংশ নিয়েছিলেন। এই সম্মেলনগুলোর মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা কিছুটা কমলেও উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়নি। গত ফেব্রুয়ারিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও, জাপানি ও দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এক যৌথ বিবৃতিতে উত্তর কোরিয়ার সম্পূর্ণ পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের প্রতি তাদের ‘দৃঢ় প্রতিশ্রুতি’ পুনর্ব্যক্ত করেন।

ট্রাম্প তার বক্তব্যে রাশিয়া ও চীনের পারমাণবিক অস্ত্রাগারের কথাও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা যদি পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যা কমাতে পারি, তবে এটি একটি দুর্দান্ত অর্জন হবে। আমাদের কাছে এত অস্ত্র আছে, এবং শক্তিও এত দুর্দান্ত।’’

ট্রাম্পের এই মন্তব্য আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। কেউ কেউ মনে করছেন, উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য ট্রাম্পের এই ইতিবাচক বক্তব্য ইঙ্গিত দেয় যে, তিনি কিম জং উনের সঙ্গে পুনরায় আলোচনায় বসতে আগ্রহী। তবে অন্যরা এই আশঙ্কা প্রকাশ করছেন যে, উত্তর কোরিয়াকে ‘পারমাণবিক শক্তিধর’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার মাধ্যমে ট্রাম্প উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক কর্মসূচিকে বৈধতা দিতে পারেন।

বর্তমান পরিস্থিতিতে উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক কর্মসূচি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা অব্যাহত রয়েছে। বিশ্ববাসীর চোখ এখন এই দুই দেশের পরবর্তী কূটনৈতিক পদক্ষেপের দিকে।

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy