“আমাদের হামলার লক্ষ্য ইরানের…?”-ক্ষেপণাস্ত্র হামলা নিয়ে যা বললেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক সামরিক হামলার মূল উদ্দেশ্য দেশটির সরকার পরিবর্তন নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বার্থে সৃষ্ট পরমাণু হুমকি মোকাবিলাই ছিল বলে স্পষ্ট জানিয়েছেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিটার হেগসেথ। মার্কিন প্রতিরক্ষা সদর দফতর পেন্টাগনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অবস্থান ব্যক্ত করেন।

সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে হেগসেথ বলেন, “এই মিশনের লক্ষ্য ইরানের বর্তমান সরকারে পরিবর্তন আনা ছিল না; বরং ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি থেকে আমাদের জাতীয় স্বার্থের ওপর আসা হুমকি ঠেকানোই ছিল আমাদের মূল উদ্দেশ্য।” তিনি এই অভিযানকে ‘একটি নির্ভুল সামরিক অভিযান’ বলেও দাবি করেন, যা সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনের জন্য পরিচালিত হয়েছে।

মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, মার্কিন সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা ‘প্রায় সীমাহীন’। তবে ইরানের ক্ষেত্রে পরিচালিত এই হামলার পরিধি ‘ইচ্ছাকৃতভাবে সীমিত’ রাখা হয়েছে। হেগসেথ মনে করেন, এর মাধ্যমে ইরানকে একটি নির্দিষ্ট বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

এদিকে, হেগসেথ এখনও আশা প্রকাশ করেছেন যে ইরান আলোচনার টেবিলে ফিরে আসবে। তাঁর দাবি, যুক্তরাষ্ট্র কী পদক্ষেপের মাধ্যমে তাদের দাবিগুলো পূরণ করতে চায়, সে সম্পর্কে ইরান সঠিকভাবে অবগত। তিনি বলেন, “আমি কেবল নিশ্চিত করতে পারি যে ইরানিদের কাছে একাধিক চ্যানেলে প্রকাশ্য ও ব্যক্তিগতভাবে বার্তা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে, যা তাদের আলোচনার টেবিলে আসার প্রতিটি সুযোগ করে দিচ্ছে।”

বিশ্লেষকদের মতে, পেন্টাগনের এই বক্তব্য একদিকে যেমন আন্তর্জাতিক মহলে এই হামলার উদ্দেশ্য সম্পর্কে ভুল ধারণা নিরসনের চেষ্টা, তেমনি অন্যদিকে ইরানকে কূটনৈতিক সমাধানের পথে ফিরিয়ে আনার একটি কৌশলগত প্রচেষ্টা। ওয়াশিংটন স্পষ্ট বার্তা দিতে চাইছে যে তাদের সামরিক সক্ষমতা থাকলেও, তারা বৃহত্তর সংঘাত এড়াতে চায় এবং আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যার সমাধানকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। তবে ইরানের পক্ষ থেকে এর প্রতিক্রিয়া এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার ওপর এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব কী হবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy