
গুজরাটের বরোদা শহরে মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানোর এক ভয়াবহ ঘটনায় এক মহিলার মৃত্যু হয়েছে এবং ৭ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার রাতে বরোদার কারেলিবাগ এলাকায়। সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়া এই ঘটনায় অভিযুক্ত আইনের ছাত্র রক্ষিত রবীশ চৌরাসিয়া এবং তাঁর বন্ধু মিত চৌহানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রক্ষিত রবীশ চৌরাসিয়া বরোদার এমএস বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের ছাত্র এবং উত্তরপ্রদেশের বারাণসীর বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার রাতে তিনি মদ্যপ অবস্থায় ১০০ কিলোমিটারেরও বেশি গতিবেগে গাড়ি চালাচ্ছিলেন। গাড়িতে তাঁর সঙ্গে ছিলেন বন্ধু মিত চৌহান। হঠাৎ গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন রক্ষিত। এরপর তাঁর গাড়িটি রাস্তায় চলাচলকারী বেশ কয়েকটি বাইক ও স্কুটারে ধাক্কা মারে। এই সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই এক মহিলার মৃত্যু হয় এবং ৭ জন গুরুতর আহত হন। আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। তারা বর্তমানে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ঘটনার সময় গাড়ির সামনের অংশ সম্পূর্ণ দুমড়ে-মুচড়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গাড়িটি দ্রুতগতিতে আম্রপালি কমপ্লেক্সের কাছে টার্ন নেওয়ার সময় পথচারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অনেকে পালিয়ে গেলেও বেশ কয়েকজন ধাক্কার শিকার হন।
ঘটনার পর উত্তেজিত জনতা রক্ষিত ও তাঁর বন্ধুকে ঘিরে ধরে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, রক্ষিত অদ্ভুত আচরণ করছিলেন। তিনি ‘আবার হয়ে যাক’ বলে একজন মেয়ের নাম চিৎকার করতে থাকেন এবং পরে হঠাৎ ‘ওম নমঃ শিবায়’ মন্ত্র জপ শুরু করেন। উত্তেজিত জনতা তাঁকে মারধরও করে বলে অভিযোগ রয়েছে।
ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং রক্ষিত ও মিতকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়। জয়েন্ট সিপি লীনা পাতিল বলেন, ‘‘এটি একটি মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানোর ঘটনা। গাড়ির সঙ্গে স্কুটারের সংঘর্ষে একজন মহিলার মৃত্যু হয়েছে। অভিযুক্ত চালককে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং পুলিশ ঘটনাটি নিয়ে আরও তদন্ত করছে।’’
এই ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকেই মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানোর বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রাসঙ্গিক আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে এবং মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানোর মতো ঘটনা রোধে আরও কঠোর নজরদারি করা হবে।
এই ঘটনা শহরে মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানোর বিপদ এবং এর ভয়াবহ পরিণতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। সকলের সচেতনতা এবং কঠোর আইন প্রয়োগের মাধ্যমেই এরকম দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।