
ইরানের পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর মধ্যপ্রাচ্যে যখন নতুন করে উত্তেজনা তুঙ্গে, ঠিক তখনই এই পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা করে আন্তর্জাতিক মহলে সরব হল চিন। বেজিং স্পষ্ট জানিয়ে দিল, এই মার্কিন হামলা কেবল ইরানের সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত নয়, এটি আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (IAEA)-এর নীতি-নিয়ম এবং রাষ্ট্রপুঞ্জের সনদ সহ আন্তর্জাতিক আইনের চরম লঙ্ঘন।
চিনের বিদেশমন্ত্রকের তরফে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ইরানের উপর আমেরিকার এই হামলা, IAEA-র নীতি লঙ্ঘন করে পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রে আঘাত হানার তীব্র নিন্দা করছে চিন। আমেরিকার এই পদক্ষেপ রাষ্ট্রপুঞ্জ, আন্তর্জাতিক আইনেরও পরিপন্থী।’ বেজিংয়ের মতে, আমেরিকার এই আগ্রাসী পদক্ষেপ পশ্চিম এশিয়াকে আরও গভীর সংকটের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
পশ্চিম এশিয়ায় উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তোলার জন্য চিন আগেও আমেরিকাকে দায়ী করেছে। এদিনও বেজিং তার সেই অবস্থানেই অটল থাকে। বিবৃতিতে জোর দিয়ে বলা হয়, ‘এই সংঘাতে যারা যুক্ত, বিশেষ করে ইজরায়েলকে চিন একটাই কথা বলতে চায়, যত দ্রুত সম্ভব যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্তে পৌঁছন, নিরীহ নাগরিকদের নিরাপত্তাকে প্রাধান্য দিন, আলোচনা ও সমঝোতার পথে হাঁটুন।’ চিন জানিয়েছে, তারা সব সময় ন্যায়ের পক্ষে এবং পশ্চিম এশিয়ায় শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার জন্য আন্তর্জাতিক মহলের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে প্রস্তুত।
উল্লেখ্য, গত শনিবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রে হামলা চালিয়ে সেগুলিকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার দাবি করে। যদিও ইরান এই দাবি অস্বীকার করে জানায়, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অতি সামান্য। ইরানের বিদেশ মন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, শান্তিপূর্ণ পরমাণু প্রকল্পে হামলা চালিয়ে আমেরিকা যে পদক্ষেপ করেছে, তার ফল ভয়াবহ হবে। এই পরিস্থিতিতে আব্বাস আরাঘচি সোমবার মস্কোয় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে এক জরুরি বৈঠকে যোগ দিতে রওনা দিচ্ছেন, যা আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।