আত্মহত্যা নাকি দুর্ঘটনা? BJP নেতার আপ্ত-সহায়কের মৃত্যু ঘিরে তৈরী হচ্ছে রহস্য

কেষ্টপুরের রবীন্দ্রপল্লির এআই ৬৬ নম্বর বাড়িটি যেন আজ এক শোকস্তব্ধ ধ্বংসস্তূপ। চারপাশে আগুনের পোড়া গন্ধ, দেওয়ালে ছড়িয়ে থাকা কালো দাগ— সব মিলিয়ে মনে হয়, যেন প্রাণটাই হারিয়েছে বাড়িটি। এক সময়ের বসবাসযোগ্য ঠিকানা এখন নিস্তব্ধ এক মৃত্যুপুরী।মঙ্গলবার রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আচমকাই ভয়াবহ আগুনে গ্রাস করে বাড়িটিকে। মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে আগুন, ঘটে বিপর্যয়।

মৃত ব্যক্তি কে?
জানা গিয়েছে, ওই বাড়িতে একাই থাকতেন ৪৯ বছর বয়সি সব্যসাচী চক্রবর্তী। তিনি বিজেপি নেতা সুভাষ সরকারের প্রাক্তন আপ্ত-সহায়ক ছিলেন। এই অগ্নিকাণ্ডেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। তাঁর পুড়ে যাওয়া দেহ উদ্ধার করে পাঠানো হয়েছে আর জি কর হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য। কীভাবে আগুন লাগল, তা এখনও স্পষ্ট নয়, তবে প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান— শর্ট সার্কিট থেকেই আগুন ছড়িয়ে পড়েছে।

এই দুর্ঘটনা নিছকই শর্ট সার্কিট, না কি এর পেছনে রয়েছে অন্য কোনও কারণ— উঠছে এমন প্রশ্নও। প্রতিবেশীদের দাবি, ঘটনার সময় ঘর থেকে বেরিয়ে আসার কোনও চেষ্টার চিহ্ন মেলেনি। তাহলে কি ঘুমের মধ্যেই প্রাণ হারান তিনি? না কি দেহে ছিল আগে থেকেই অচেতনতার ছাপ?

বিজেপি নেতা সুভাষ সরকার জানিয়েছেন, সব্যসাচী দীর্ঘদিন ধরেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। প্রায়ই রাতে ঘুমোতে পারতেন না, চিকিৎসকদের দ্বারে দ্বারে ঘুরতেন, নিয়মিত ওষুধও চালু ছিল। নেতার কথায়, ‘‘কয়েক মাস আগে ওকে বলেছিলাম বাঁকুড়ায় এসে ছুটি কাটাতে, এসেওছিল। কিন্তু তাতেও মানসিক অবস্থার উন্নতি হয়নি।’’

সুভাষ সরকারের আশঙ্কা, ঘটনার পিছনে সব্যসাচীর মানসিক অবসাদই বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা জরুরি। যদিও পুরো বিষয়টি এখন পুলিশের তদন্তাধীন। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে এলে হয়তো মৃত্যুর প্রকৃত কারণ কিছুটা হলেও স্পষ্ট হবে।

এই ঘটনায় শুধু কেষ্টপুর নয়, রাজনৈতিক মহলেও নেমে এসেছে শোকের ছায়া। আগুন নিভে গেলেও, জ্বলন্ত প্রশ্ন রেখে গেল এই মৃত্যু— দুঃখ কি কখনও নিভে?

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy