
সম্প্রতি বাংলাদেশের জেল থেকে মুক্তি পেয়ে বাড়ি ফিরে এসেছেন শীতলকুচির কৃষক উকিল বর্মন। সীমান্ত সংলগ্ন কাঁটাতারের ওপারে নিজেদের জমিতে চাষ করতে গিয়ে বাংলাদেশি দুষ্কৃতীদের হাতে অপহৃত হয়ে পরবর্তীতে বিজিবি’র হাতে ধরা পড়েন তিনি। অনুপ্রবেশকারী হিসেবে চিহ্নিত করে তাকে বাংলাদেশের জেলে পাঠানো হয়েছিল। গত ১৫ মে মুক্তি পেয়ে ফিরে আসার পর উকিল বর্মন জানিয়েছিলেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাঁটাতারের ওপারের জমিতে আর চাষ করতে যাবেন না। বাবার এই সিদ্ধান্তের পর পরিবারের জীবিকা নির্বাহ নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন তার স্ত্রী ও ছেলে।
এই কঠিন সময়ে উকিল বর্মন ও তার পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মতো উকিল বর্মনের ছেলে পরিতোষ বর্মনের চাকরির ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাকে কোচবিহার এমজেএন মেডিক্যাল কলেজে সুপারভাইজার পদে কন্ট্রাকচুয়াল কর্মী হিসাবে নিয়োগ করা হয়েছে।
সোমবার পরিতোষ বর্মন নতুন চাকরিতে যোগ দিয়েছেন। এ সময় কোচবিহার এমজেএন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির সদস্য অভিজিৎ দে ভৌমিক এবং কোচবিহারের সাংসদ জগদীশ বর্মা বসুনিয়া উপস্থিত ছিলেন।
অভিজিৎ দে ভৌমিক জানান, “ওই পরিবারটির প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে। বাংলাদেশ থেকে ফেরার পর থেকেই উকিল বর্মন বলছিলেন, আর সীমান্তে চাষের কাজে যাবেন না। ওঁর স্ত্রী বলেছিলেন, তাহলে সংসার কীভাবে চলবে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো উকিল বর্মনের ছেলের চাকরির ব্যবস্থা করা হয়েছে।”
চাকরিতে যোগ দেওয়ার পর পরিতোষ বর্মন বলেন, “বাংলাদেশের জেল থেকে ফিরে আসার পর বাবা বলেছিল কাঁটাতারের ওপারে আর জমি চাষ করতে যাবে না। ফলে কীভাবে সংসার চলবে এটা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলাম। চাকরি মেলায় অনেকটাই স্বস্তি মিলল। আমার কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অনেক ধন্যবাদ।” তিনি জানান, আজ সুপারভাইজার পদে চাকরিতে যোগ দিলেন এবং আগামীকাল থেকে কাজ শুরু করবেন।
ছেলের চাকরি হওয়ায় খুশি উকিল বর্মন নিজেও। তিনি জানান, “প্রথম থেকেই মুখ্যমন্ত্রী আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে আসছিলেন। আজ ছেলের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হলো। খুব ভালো লাগছে।” এই ঘটনা রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে দুর্দশাগ্রস্ত পরিবারের পাশে থাকার একটি উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।