
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে ঘটে যাওয়া ঘটনার প্রেক্ষিতে তিন প্রতিবাদী চিকিৎসকের পোস্টিং নিয়ে বিতর্কের জেরে এবার নড়েচড়ে বসলো কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু রাজ্য সরকারকে আগামী সোমবারের মধ্যে এই বিষয়ে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী মঙ্গলবার এই মামলার ফের শুনানি হবে।
পোস্টিংয়ের ‘ন্যায়্যতা’ নিয়ে হাইকোর্টের প্রশ্ন
দেবাশিস হালদার, অনিকেত মাহাতো ও আসফাকুল্লা নাইয়া— এই তিন চিকিৎসক তাদের পোস্টিং নিয়ে আপত্তি জানিয়ে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। সোমবার এই মামলার শুনানিতে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু রাজ্যের উদ্দেশে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ছুড়ে দেন। তিনি জানতে চান, “তিন চিকিৎসকের পোস্টিং নিয়ে সিদ্ধান্ত অথবা পদ্ধতির ন্যায্যতা কীভাবে প্রমাণ করবেন?” একই সঙ্গে তিনি প্রশ্ন করেন, “পোস্টিং কি মেধাভিত্তিক হয় নাকি যাকে যেখানে পছন্দ সেখানে পাঠিয়ে দেওয়া হয়?” হাইকোর্ট সরকারের থেকে এর স্পষ্ট উত্তর চেয়েছে।
চিকিৎসকদের ‘ষড়যন্ত্রে’র অভিযোগ
আবেদনকারী চিকিৎসকদের অভিযোগ, মেরিট লিস্ট অনুসারে রাজ্য তাদের পোস্টিং দেয়নি। তাদের দাবি, আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদের অন্যতম মুখ হওয়ার কারণে ‘ষড়যন্ত্র’ করে এবং অবৈধভাবে তাদের পোস্টিং দেওয়া হয়েছে। এই অভিযোগ নিয়েই অনিকেত, দেবাশিস ও আসফাকুল্লা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন।
অনিকেতের পোস্টিং ইস্যুর পাশাপাশি দেবাশিস ও আসফাকুল্লার মামলাতেও রাজ্যকে রিপোর্ট তলব করা হয়েছে। আগামী সোমবারের মধ্যে সেই রিপোর্ট হাইকোর্টে জমা দিতে হবে।
অনিকেতের পাশে আদালত: আপাতত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নয়
এছাড়া, অনিকেত আদালতের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন যে, মামলা চলাকালীন তাকে আরজি কর হাসপাতালেই কাজ করতে দেওয়া হোক এবং এই মুহূর্তে তার বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হয়। হাইকোর্ট অনিকেতের এই আর্জি মেনে নিয়েছে। বিচারপতি বসু মৌখিকভাবে পরামর্শ দিয়েছেন যে, আগামী সোমবার পর্যন্ত রাজ্য যেন অনিকেতের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক পদক্ষেপ না নেয়।
এই মামলার রায়দান রাজ্যের চিকিৎসক পোস্টিং নীতিতে বড়সড় প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।