
মঙ্গলবার পশ্চিম মেদিনীপুরে ঘটে গেল জোড়া পথ দুর্ঘটনা। একটি ঘটনায় কেশিয়াড়িতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে জঙ্গলে ঢুকে পড়ল একটি গাড়ি, যেখানে চালক ও আরোহী দু’জনেই দুর্ঘটনার পর থেকে পলাতক। অন্য ঘটনাটি ঘটেছে খড়্গপুরে জাতীয় সড়কে, যেখানে ভাগ্যক্রমে প্রাণে বেঁচেছেন এক গাড়ি চালক, তবে গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দুটি ক্ষেত্রেই অতিরিক্ত গতিকে দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে, এবং গাড়ির এয়ারব্যাগ জীবন রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
কেশিয়াড়ি থানার হাতিগাড়িয়া এলাকায় কেশিয়াড়ি-খড়্গপুর রাজ্য সড়কে এই ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সূত্রে খবর, কেশিয়াড়ির দিক থেকে একটি দ্রুতগামী গাড়ি খড়্গপুরের দিকে যাচ্ছিল। হাতিগাড়িয়ার কাছে পৌঁছতেই গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সজোরে জঙ্গলের একটি শাল গাছে ধাক্কা মারে। দুর্ঘটনার তীব্রতায় গাড়ির সামনের অংশ সম্পূর্ণ দুমড়ে-মুচড়ে যায় এবং একটি চাকাও খুলে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, গাড়ির এয়ারব্যাগ খুলে যাওয়ায় চালক ও আরোহী গুরুতর আঘাত থেকে রক্ষা পান। দুর্ঘটনার পর আহত অবস্থাতেই তাঁরা কোনোমতে গাড়ি থেকে বেরিয়ে জঙ্গলের ভেতর পালিয়ে যান। খবর পেয়ে কেশিয়াড়ি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটিকে উদ্ধার করে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, অতিরিক্ত গতিই এই দুর্ঘটনার মূল কারণ। পুলিশ পলাতক চালক ও আরোহীর খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে।
একই দিনে খড়্গপুর গ্রামীণ থানার সাঁকোয়া এলাকায় জাতীয় সড়কের ওপর আরও একটি দুর্ঘটনা ঘটে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, খড়্গপুরের দিক থেকে একটি গাড়ি ওডিশার বালেশ্বরের দিকে যাওয়ার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি কন্টেনারের পিছনে ধাক্কা মারে। ধাক্কার পর গাড়িটি কন্টেনারের পিছনে আটকে থাকা অবস্থাতেই বেশ কিছুটা দূর চলে যায়।
এই ঘটনায় চণ্ডীপুরের বাসিন্দা গাড়ি চালক অনন্ত পাত্র গুরুতর আহত হন। তবে, এক্ষেত্রেও গাড়ির এয়ারব্যাগ খুলে যাওয়ায় তিনি অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন। স্থানীয়দের সহায়তায় তাঁকে উদ্ধার করে আশঙ্কাজনক অবস্থায় খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। খবর পেয়ে খড়্গপুর গ্রামীণ থানার পুলিশ ও জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। দুর্ঘটনার জেরে জাতীয় সড়কের ওই এলাকায় সাময়িক যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ ক্রেনের সাহায্যে দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটিকে উদ্ধার করে।
জেলা পুলিশের এক আধিকারিক মন্তব্য করেছেন, “দু’টি দুর্ঘটনার ক্ষেত্রেই দায়ী অতিরিক্ত গতি। উভয় ক্ষেত্রেই সঠিক সময়ে গাড়ির এয়ারব্যাগ খুলে যাওয়াতে প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন আরোহী ও চালকরা।” এই ঘটনাগুলি আবারও সড়কে গতি নিয়ন্ত্রণের গুরুত্ব এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থার অপরিহার্যতা তুলে ধরছে।