
বঙ্গ সফরে অমিত শাহ, আর বৈঠকে ডাক নেই দিলীপ ঘোষের! সূত্রের খবর, বিজেপির ‘চাণক্য’র দু’দিনের সফরে রাজ্য বিজেপির একাধিক বৈঠকে ব্রাত্য থাকছেন দিলীপ। স্বাভাবিকভাবেই, রাজনৈতিক মহলে উঠছে নানা প্রশ্ন।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দু’দিনের সফরে একাধিক সরকারি ও দলীয় কর্মসূচি রয়েছে। নেতাজি ইন্ডোরে সাংগঠনিক সভা, স্বামী বিবেকানন্দের বাড়িতেও যাবেন অমিত শাহ। কিন্তু এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকগুলিতে দিলীপ ঘোষের অনুপস্থিতি যেন ‘অভিমানী’ দিলীপের ইঙ্গিত দিচ্ছে। যদিও মুখে তিনি বলছেন অন্য কথা।
দিলীপ ঘোষের সাফাই, “বড় নেতারা না ডাকলে আমি যাই না। বড় নেতাদের মান-সম্মান আছে। তারা যাদের ডাকেন, তারাই যায়। আমি প্রয়োজনে যাই। আমার প্রয়োজন হয় না। আমি নিজে সংগঠনের কাজ করি। প্রয়োজনে ডাকলে, কী করতে হবে বলেন, আমরা পালন করি।”
তিনি আরও বলেন, “আমি যখন সভাপতি ছিলাম, তখন ডাক পেতাম, গিয়েছি। এখন অন্যরা দায়িত্বে আছে। আমরা কার্যকর্তারা বৈঠকে থাকব।” অর্থাৎ, আলাদা করে ডাক না পেলেও, দলীয় বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন তিনি।
দিলীপ ঘোষ বিজেপির দলীয় শৃঙ্খলার কথাও তুলে ধরেন। তাঁর মতে, “আমাদের দলের একটা শৃঙ্খলা আছে। যে বৈঠকে-অনুষ্ঠানে যেতে বলা হয়, সেখানেই কর্মীরা যায়। নেতারা কোথায় থাকবেন, সেটা দল ঠিক করে দেয়। আমরা সেই মত মেনে চলি, ওটাকেই শৃঙ্খলা বলি।”
তবে, মোদীর বঙ্গ সফরের পর এবার অমিত শাহের সফরেও ডাক না পাওয়ায় দিলীপের ‘অভিমান’ নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে। কিন্তু দিলীপের পাল্টা প্রশ্ন, “কীসের অভিমান?” এরপরই তিনি দলীয় শৃঙ্খলার দোহাই দেন।
অমিত শাহ কলকাতায় এলে রাজারহাট-নিউটাউনের একটি বিলাসবহুল হোটেলে ওঠেন, যা দিলীপের বাড়ি থেকে মাত্র দেড় কিলোমিটার দূরে। কিন্তু তবুও তাঁদের সাক্ষাৎ হচ্ছে না। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, বিজেপিতে ক্রমশ ‘কোনঠাসা’ হয়ে পড়ছেন দিলীপ ঘোষ। দলের বৈঠক থেকে শুরু করে দিল্লি থেকে আসা নেতাদের বৈঠক, সর্বত্রই তিনি ব্রাত্য।
আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচন। রাজ্য বিজেপির দিলীপ ঘনিষ্ঠদের মতে, দলের বর্তমান পরিস্থিতিতে ক্রমশ কোণঠাসা হয়ে পড়ছেন দিলীপ। এই পরিস্থিতিতে দিলীপের দল ছাড়ার জল্পনাও তুঙ্গে। যদিও দিলীপ ঘোষ আগেই দল বদলের জল্পনা উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, তিনি বিজেপিতেই থাকবেন।
তবে, অমিত শাহের বৈঠকে দিলীপের অনুপস্থিতি এবং তাঁর ‘অভিমান’-এর জল্পনা রাজ্য বিজেপির অন্দরে নতুন করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, আগামী দিনে এই ঘটনা রাজ্য রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ তৈরি করতে পারে।