
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর স্কুল সার্ভিস কমিশন (SSC) বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। এই বিজ্ঞপ্তির ফলে ২০১৬ সালের প্যানেল বাতিলের জেরে চাকরি হারানো ২৬ হাজার স্কুল শিক্ষকের মধ্যে যারা ‘যোগ্য’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন, তারা আবার পরীক্ষায় বসার সুযোগ পাবেন। তবে ‘অযোগ্য’ হিসেবে চিহ্নিতরা এই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবেন। চাকরিহারাদের কথা মাথায় রেখেই এই নতুন বিধি জারি করা হয়েছে বলে কমিশন সূত্রে খবর।
নতুন বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছে, যেখানে শিক্ষকতার পূর্ব অভিজ্ঞতা এবং ক্লাস নেওয়ার দক্ষতার ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। এর অর্থ হলো, ২০১৬ সালের বাতিল প্যানেলের শিক্ষকরা কিছু বিশেষ সুবিধা পাবেন।
লিখিত পরীক্ষা: আগে ৫৫ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হতো, যা এখন বাড়িয়ে ৬০ নম্বরের করা হয়েছে।
শিক্ষাগত যোগ্যতা: শিক্ষাগত যোগ্যতার ওপর বরাদ্দ নম্বর ৩৫ থেকে কমিয়ে ১০ নম্বর করা হয়েছে।
ইন্টারভিউ: ইন্টারভিউয়ের জন্য সর্বোচ্চ ১০ নম্বর বরাদ্দ থাকছে, যা আগের মতোই।
অভিজ্ঞতা ও লেকচার ডেমোস্ট্রেশন: শিক্ষকতার অভিজ্ঞতার জন্য ১০ নম্বর এবং লেকচার ডেমোস্ট্রেশনের জন্য আরও ১০ নম্বর বরাদ্দ করা হয়েছে। এই দুটি মিলিয়ে মোট ২০ নম্বর থাকছে, যা শিক্ষকতার ব্যবহারিক দক্ষতার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে।
আবেদনকারীদের বয়সসীমা ও সংরক্ষণ
২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি তারিখের ভিত্তিতে ৪০ বছর বয়স পর্যন্ত চাকরিপ্রার্থীরা নিয়োগের জন্য আবেদন করতে পারবেন। তফসিলি জাতি (SC), তফসিলি জনজাতি (ST), এবং অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির (OBC) চাকরিপ্রার্থীরা রাজ্য সরকারের নিয়ম অনুযায়ী বয়সের ঊর্ধ্বসীমায় ছাড় পাবেন।
নতুন বিধি অনুযায়ী, মেধা তালিকা এবং অপেক্ষমান মেধা তালিকার মেয়াদ প্রথম কাউন্সেলিংয়ের পর থেকে এক বছর পর্যন্ত থাকবে। তবে রাজ্য সরকারের আগাম অনুমতি নিয়ে কমিশন এই মেয়াদ আরও ছয় মাস পর্যন্ত বৃদ্ধি করতে পারবে।
এছাড়াও, নতুন নিয়মে প্যানেলের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর দুই বছর পর্যন্ত লিখিত পরীক্ষার ওএমআর শিট সংরক্ষণ করা বাধ্যতামূলক। এরপরে সেগুলি নষ্ট করা যাবে। তবে ওএমআর শিটের স্ক্যান করা কপি প্যানেলের মেয়াদ শেষের পর ১০ বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করতে হবে।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত নিয়োগ বিধিতে উচ্চ প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়ার কথাও উল্লেখ রয়েছে। বিধি অনুসারে, উচ্চ প্রাথমিক নিয়োগের জন্য আগের মতোই টেট পাশ বাধ্যতামূলক। টেটের প্রাপ্ত নম্বরকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হবে, যার জন্য ৪০ নম্বর বরাদ্দ করা হয়েছে। লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হবে ২৫ নম্বরের এবং ইন্টারভিউয়ের জন্য ১৫ নম্বর থাকবে। এছাড়া, ক্লাস নেওয়ার দক্ষতা এবং শিক্ষকতার অভিজ্ঞতার জন্য সর্বোচ্চ ৫ নম্বর বরাদ্দ করা হয়েছে।
এই নতুন বিজ্ঞপ্তি হাজার হাজার চাকরিপ্রার্থীর জন্য এক নতুন আশার আলো নিয়ে এসেছে, যেখানে যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার সঠিক মূল্যায়ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।