
ফের একবার বিতর্কের কেন্দ্রে বীরভূমের দাপুটে তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল। বোলপুর থানার আইসি লিটন হালদারকে কদর্য ভাষায় ফোনে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠার পর অবশেষে বৃহস্পতিবার বোলপুরের এসডিপিও দফতরে হাজিরা দিলেন তিনি। টানা জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে তৃণমূলের এই প্রভাবশালী নেতাকে।
ঘটনার সূত্রপাত একটি ভাইরাল অডিও ক্লিপকে ঘিরে, যেখানে অনুব্রত মণ্ডলকে বোলপুর থানার আইসি-কে আপত্তিকর ভাষায় আক্রমণ করতে শোনা যায়। যদিও ওই অডিওর সত্যতা যাচাই করা হয়নি, তবে এই কথোপকথন রাজ্য রাজনীতিতে ব্যাপক শোরগোল ফেলে দেয়। বিতর্কের মুখে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে অনুব্রতকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এর পরই অনুব্রত মণ্ডল এক লিখিত চিঠিতে ক্ষমা চেয়ে নেন। চিঠিতে তিনি লেখেন, “আমার ওই কথাগুলো বলা উচিত হয়নি। আমি দুঃখিত।”
তবে এই ক্ষমাপ্রার্থনাতেও বিতর্ক থামেনি। আইসি-কে কদর্য ভাষায় আক্রমণের অভিযোগে অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৪টি ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি ধারা জামিন অযোগ্য বলে জানা গেছে, যা অনুব্রতের আইনি জটিলতা আরও বাড়িয়েছে।
তলব ও গড়হাজিরা: তারপর হাজিরা
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশ এর আগে দু’বার অনুব্রত মণ্ডলকে তলব করেছিল। প্রথমে গত শনিবার তাঁকে তলব করা হলেও, তিনি হাজিরা দেননি। এরপর রবিবার ফের তলব করা হয়, কিন্তু তখনও তিনি গরহাজির থাকেন। অবশেষে বৃহস্পতিবার এসডিপিও দফতরে এসে হাজিরা দিলেন বীরভূমের প্রাক্তন তৃণমূল সভাপতি।
বিরোধীদের কড়া প্রতিক্রিয়া
অনুত্রত মণ্ডলের ক্ষমাপ্রার্থনা সত্ত্বেও বিরোধীরা তাঁর গ্রেফতারের দাবিতে সরব হয়েছে। বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার কড়া ভাষায় বলেছেন, “কান ধরে অনুব্রত মণ্ডলকে জেলে ঢোকাতে হবে।” অন্যদিকে, কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরীও অনুব্রতর গ্রেফতারের দাবিতে সুর চড়িয়েছেন।
পুরনো বিতর্ক: পুলিশকে হুমকির ইতিহাস
উল্লেখ্য, এই প্রথম নয়, অতীতেও অনুব্রত মণ্ডলকে পুলিশকে হুমকি দিতে দেখা গেছে। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিকবার এমন অভিযোগ উঠেছে। গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পর গত বছর তিনি জেল থেকে ছাড়া পান। জেল থেকে বেরিয়ে আসার পর আবারও নতুন বিতর্কে জড়ালেন এই তৃণমূল নেতা, যা তাঁর অতীত রেকর্ডের পুনরাবৃত্তি ঘটাচ্ছে। এই ঘটনা রাজ্য রাজনীতিতে নতুন করে উত্তাপ ছড়াবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।