‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিতর্কিত এবং সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক ভিডিও পোস্ট করার অভিযোগে ইনস্টাগ্রাম ইনফ্লুয়েন্সার শর্মিষ্ঠা পানোলিকে শুক্রবার রাতে গুরগাঁও থেকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ। শনিবার তাকে আদালতে পেশ করা হয় এবং আগামী ১৩ জুন পর্যন্ত বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পুনের একটি আইন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী শর্মিষ্ঠা পানোলি তার ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে কয়েকজন বলিউড অভিনেতাকে সরাসরি কাঠগড়ায় দাঁড় করান। তার অভিযোগ ছিল, ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে তারা কেন মুখ খোলেননি? এই কটাক্ষপূর্ণ ভিডিওটি দ্রুতই ভাইরাল হয়ে যায়, যা মিশ্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দেয়। অনেকে ভিডিওটির তীব্র বিরোধিতা করেন এবং তাকে ট্রোল করেন। আবার কেউ কেউ পাল্টা হুমকি দিতে শুরু করেন।
চাপের মুখে পড়ে শর্মিষ্ঠা পানোলি ভিডিওটি ডিলিট করেন এবং পরে ক্ষমাও চান। কিন্তু ততক্ষণে কলকাতা পুলিশ তার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ শুরু করে দেয়। পুলিশ তার এবং তার পরিবারের কাছে একাধিকবার আইনি নোটিশ পাঠায়। তবে, পিটিআই সূত্রে খবর, পানোলির সঙ্গে নাকি তার পরিবারের যোগাযোগ ছিল না, ফলে নোটিস তার হাতে পৌঁছায়নি।
এরপর পুলিশ আদালতের দ্বারস্থ হয় এবং আদালত তার নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। সেই অনুযায়ী শুক্রবার রাতে কলকাতা পুলিশের একটি দল গুরগাঁও থেকে তাকে গ্রেফতার করে।
এক পুলিশ আধিকারিক পিটিআইকে বলেন, “আমরা একাধিকবার পানোলি ও তার পরিবারের কাছে নোটিস পাঠানোর চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু যোগাযোগ করা যাচ্ছিল না। এরপর আদালতের অনুমতি নিয়ে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। শুক্রবার রাতে তাকে গুরগাঁও থেকে গ্রেফতার করা হয়।”
উল্লেখ্য, গত ৭ মে, ২০২৫ তারিখে ‘অপারেশন সিঁদুর’ অভিযান পরিচালিত হয়। ২২ এপ্রিল পহেলগাঁও জঙ্গি হামলায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল, যাদের অধিকাংশই ছিলেন পর্যটক। এই হামলার প্রত্যুত্তরে ভারত এই সামরিক অভিযানে নামে এবং পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের জঙ্গি ঘাঁটিগুলো নিশানা করে আঘাত হানা হয়।
আপাতত ১৩ জুন পর্যন্ত বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রয়েছেন শর্মিষ্ঠা পানোলি। পুলিশ সূত্রে খবর, এই মামলার তদন্ত এখনও চলছে। এই গ্রেফতারি কি সোশ্যাল মিডিয়ায় উসকানিমূলক পোস্টের বিরুদ্ধে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে?
