১০ বছর ধরে মাকে ঘরে আটকে রেখেছে ছেলেরা, দেওয়া হতোনা খাবারও

১০ বছর ধরে বৃদ্ধ মাকে ঘরে আটকে রাখে ছেলেরা। ঠিকমত খাবারও জোটেনি ছেলেদের কাছে। ছেলেরা দুজনেই সমাজে প্রতিষ্ঠিত। একজন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশকর্মী, অন্যজনও সরকারি চাকরি করেন। তারা দুজনে মিলেই নিজেদের মাকে টানা দশ বছর ধরে একটি ঘরে আটকে রেখেছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

খাবার বলতে জুটত প্রতি সপ্তাহে বিস্কুট আর পাঁউরুটি। ভারতের তামিলনাড়ুর তাঞ্জাভুরে এই ঘটনা ঘটেছে। গত শুক্রবার রাজ্য সমাজকল্যাণ দপ্তরের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে গণজ্যোতি নামে ৭২ বছর বয়সী ওই বৃদ্ধাকে উদ্ধার করেন। তারপরেই বৃদ্ধার দুই ছেলের অপকর্মের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। গতকাল বৃদ্ধার দুই ছেলের বিরুদ্ধে বয়স্ক নাগরিককে নির্যাতন ও অবহেলার মামলা দায়ের করা হয়।

বৃদ্ধার বড় ছেলের নাম সানমুগাসুন্দরম (৫০)। ওই ব্যক্তি পুলিশ বিভাগ থেকে অবসর নিয়ে বর্তমানে অন্যত্র কাজ করছেন। তার ভাই বেঙ্কটেশন দূরদর্শনে কাজ করেন। তার বয়স ৪৫ বছর। তিনি পাট্টুকোট্টাইয়ে কর্মরত আছেন। ওই বৃদ্ধার স্বামীর মৃত্যুর পর তার মেয়ে মায়ের পুরো দায়িত্ব নেন। কিন্তু বাবার মৃত্যুর দুবছর পর মেয়েও মারা যান। তারপরেই বৃদ্ধার দুর্দশার শুরু হয়।

গত শুক্রবার রাজ্য সমাজকল্যাণ দপ্তরের কাছে অজ্ঞাতপরিচয়ে এক ব্যক্তি বৃদ্ধার ওপর হওয়া নির্যাতনের কথা জানান। তারপরেই দপ্তরের নারী কর্মীরা গিয়ে গণজ্যোতিকে প্রায় বিবস্ত্র অবস্থায় উদ্ধার করেন। পরবর্তীতে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ওই বৃদ্ধার মানসিক দেখা দিয়েছে। তাই তার চিকিৎসার জন্য মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া হবে।

গণজ্যোতির বড় ছেলে অবশ্য পুরো ঘটনার দায় নিজের ভাইয়ের ওপরই দিয়েছেন। তার দাবি, বাবার মৃত্যুর পর পেনশনের তিরিশ হাজার টাকার পুরোটাই তার ভাই নিতেন। তাই মাকে দেখাশোনার দায় ছিল তার ভাইয়েরই। এদিকে তামিলনাড়ুর স্বাস্থ্য ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী এম সুব্রহ্মণ্যন জানিয়েছেন, এই ঘটনায় দোষীদের কঠিন শাস্তির আওতায় আনা হবে।

(প্রতীকী ছবি ব্যবহার করা হয়েছে)

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy