স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে ইগো-র লড়াই বেড়েই চলেছে, তাহলে মাথায় রাখুন কয়েকটি বিষয়

সুখী দাম্পত্য জীবন সকলেরই কাম্য। কিন্তু, বাস্তবে এত সহজে তা হয় না। বিয়ের প্রথম প্রথম সব ঠিক থাকলেও, বছর ঘুরতে না ঘুরতেই অশান্তি বাঁধতে থাকে। সে বিয়ে সম্বন্ধ করেই হোক কিংবা ভালোবাসার বিয়ে। দাম্পত্য কলহ প্রায়ই দেখা দেয় সব সম্পর্কে। এই সমস্যা এক সময় বড় আকার নেয়। যা বিচ্ছেদের কারণ হতে পারে। তাই সম্পর্ক সুস্থভাবে টিকিয়ে রাখতে চাইলে প্রথম থেকে প্রয়োজন সতর্কতা। কয়টি জিনিস মেনে চলুন, তাহলে বজায় থাকবে দাম্পত্য সুখ।

সম্পর্কে নানা কারণে অশান্তি হতে পারে। কখনও হতে পারে পারিবারিক কারণে, কখনও হতে পারে অ্যাডজাস্টামেন্টের অভাবে। তবে, সব থেকে বেশি যে কারণে অশান্তি হচ্ছে, তা হল ইগো। আজকাল বহু সম্পর্কে ভালোবাসার থেকে ইগো অনেক বড় হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এই জন্য ছোট ছোট বিষয় নিয়ে নানা রকম সমস্যা দেখা দিচ্ছে।

বর্তমানে অধিকাংশ পরিবারেই স্বামী-স্ত্রী দুজনেই কর্মরত। দুজনেই তাদের পেশা নিয়ে ব্যস্ত। একই পেশা হোক কিংবা আলাদা। এই থেকে দেখা দিচ্ছে ইগো। সব সময় দুজনের সময় মিলবে এমন নয়। কিন্তু, ইগো-র লড়াইয়ের জন্য একে অন্যের সঙ্গে অ্যাডজাস্ট করতে চান না। এতে বাড়তে থাকে সমস্যা। এই সমস্যা থেকে বিবাহ বিচ্ছেদ পর্যন্ত হতে পারে।

সম্পর্ক সুস্থ রাখতে চাইলে কয়টি জিনিস দুজনেই মেনে চলুন। সবার আগে দুজনে দুজনের মানসিকতা বোঝার চেষ্টা করুন। যদি কোনও বিষয় নিয়ে দুজনের মতোবিরোধ হয়, তাহলে না বুঝে ঝগড়া করবেন না। কেন এমন সমস্যা হচ্ছে তা বোঝার চেষ্টা করুন। তা না হলে এই সমস্যা বাড়তেই থাকবে। ভুল বোঝাবুঝি যে কোনও সম্পর্ক নষ্ট করে দেয়।

জেদ করবেন না। জেদের জন্য নানা রকম সমস্যা দেখা দেয়। সম্পর্কে সব সময় এক জনের ইচ্ছে প্রাধান্য পাবে এমন হতে পারে না। তাই সব সময় দুজনের মানসিকতা বোঝার চেষ্টা করুন। এমন কাজ করবেন না যাতে অশান্তি বাড়ে। যদি সত্যিই সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে চান, তাহলে দুজনেই নিজেদের ভুল পরিবর্তন করুন।

অনেকেই আছেন যারা মনের কথা মনেই রাখেন। এতে বাড়তে থাকে অশান্তি। মনের কথা স্পষ্ট করে জানান। হতেই পারে সে আপনার মনের কথা বুঝতে পারে না। তাই বলে, সব জিনিস বারে বারে মেনে নিতে শুরু করলে পরে এই নিয়েই অশান্তি হবে। সকলে সমান হয় না। এই কথা মেনে নিন। তাই আপনার চাহিদা মুখে জানান।

একে অন্যকে সময় দিন। একে অন্যের থেকে যত দূরে থাকবেন, তত অশান্তি বাড়বে। সম্পর্কে দেখা দেবে ইগোর লড়াই। তাই সময় কাটান। মনের কথা ভাগ করে নিন। শুধু দুজনে রেস্তোরাঁয় যান, কিংবা কোথাও ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করুন। এতে সম্পর্ক মজবুত হবে। তাই ইগোর লড়াই বন্ধ করতে চাইলে সময় কাটান।

কাউকে পরিবর্তনের চেষ্টা করবেন না। অনেকেই সম্পর্কে থাকাকালীন অন্যজনকে নিজের মতো বানাতে চান। যে যেমন তাকে সেভাবেই গ্রহণ করুন। তাহলে অশান্তি কম হবে। তাই দাম্পত্য শান্তি চাইলে ভুলেও বিপরীতে থাকা মানুষটাকে পরিবর্তন করার চেষ্টা করবেন না। এতে সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে।

ইগোর লড়াই বন্ধ করতে চাইলে সব কাজ ভাগাভাগি করে নিন। সংসারের খরচ নিয়ে অনেকেই মনে ইগোর সমস্যা দেখা দেয়। তাই আগে থেকে সবক্ষেত্রে খরচ ভাগ করে নিন। তা না হলে অশান্তি দেখা দিতে পারে। অর্থ সংক্রান্ত বিষয়ে নিজের মনের কথা জানান। আপনার কোনও জিনিস পছন্দ না হলে তা মেনে নেবেন না।

সুন্দর সম্পর্ক বজায় রাখতে চাইলে দুজনেই মানিয়ে নিতে হবে। সংসারেশুধু মেয়েরা মানিয়ে চলবে এই ধারণা ভুল। প্রত্যাশা শুধু এক তরফা হবে তা হতে পারে না। তাই দুজনেই সমান ভাবে দায়িত্ব পালন করুন। অনেকেই পরিবারকে নিয়ে চলতে পছন্দ করেন। এর মাসেই নিজেদের ব্যক্তিগত জীবন উপেক্ষা করবেন না।

বর্তমানে অফিসে কাজের চাপে সকলেই ব্যস্ত। সকলেরই একে অন্যের জন্য সময় নেই। এই সময়ের অভাব অধিকাংশ দাম্পত্য অশান্তির কারণ। তাই সম্পর্ক সুন্দর রাখতে চাইলে একে অন্যকে সময় দিন। অফিস ও ব্যক্তিগত জীবন সুন্দর করে ব্যালান্স করার চেষ্টা করুন। তবেই সম্পর্ক ভালো থাকবে।

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy