স্বামী ছে’ড়ে যাওয়ার পর গাড়িতে করে শুরু খাবার বিক্রি, রোজ ১০,০০০ টাকা আয় করেন শিল্পা

স্বামী ছে’ড়ে যাওয়ার পর গাড়িতে করে খাবার বিক্রি করে রোজ ১০ হাজার টাকা আয় করেন শিল্পা-জীবন কখন কাকে কোন পর্যায়ে দাঁড় করিয়ে দেবে তা কেউ জানে না। তাই আমা’দের উচিত নি’র্বিঘ্নে প্রতিটি পরিস্থিতির বিরু’দ্ধে লড়াই করার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করা। তারপরেশিল্পার এই গল্পটি সোশ্যাল-মিডিয়ায়-ভাইরাল হচ্ছে এবং এটি ভাইরাল হওয়ার পেছনে আরও একটি কারণ হলো মাহিন্দ্রা অ্যান্ড মাহিন্দ্রা কোম্পানির মালিক আনন্দ মাহিন্দ্রা শিল্পার গল্পটি টুইট করেছেন। মিডিয়ার সাথে কথোপকথনের সময় শিল্পা নিজের সম্পর্কে বলেছিলেন যে যদিও তিনি ছোট থেকেই রান্নার প্রতি আগ্রহী ছিলেন তবে ভবি’ষ্যতে এটি তার ব্যবসা হয়ে উঠবে তা তিনি কখনও ভাবেননি এবং এমন একটি ঘটনা ঘটেছিল যার কারণে তিনি একটি খাবারের দোকান পেয়েছিলেন।

এই খাবারের দোকান টি নিজের থেকে নয় বরং বাধ্যতামূলকভাবে শুরু করতেহয়েছিল তাকে।তিনি বলেছিলেন যে তিনি নিজের ইচ্ছায় এই খাবারের ব্যবসায় আসেননি। তবে আজকের সময় শিল্পা তার খাবারের দোকানের কারণে ম্যাঙ্গালোরে খ্যাতি অর্জন করছে। শিল্পা তার লড়াই প্রকাশ করার সময় খুব আবেগপ্রবণ হয়ে ওঠে আবার কখনও কখনও আ’ত্মবিশ্বা’সের হাসি তার মুখে আসে কখনো কখনো আবার সে একেবারে চুপ হয়ে যায়। 2005 সালে যখন শিল্পা বিয়ের পর তার স্বামীর সাথে ম্যাঙ্গালোরে থাকতেন তখন সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল। তবে 2008 সালে একদিন শিল্পার স্বামী বললেন যে ব্যবসার লোন এর কারণে তাকেকিছুদিনের জন্য ব্যাঙ্গালুরুতে যেতে হবে। এখান থেকেই শিল্পার জীবনে একটি ইউ টার্ন আসে যখন তার স্বামী আর ফিরে আসে না। তার স্বামী যখন তাদের ছেড়ে চলে গেলেন তখন শিল্পার সাথে তার একটি তিন বছরের ছেলেও ছিল।তার স্বামী ছেড়ে চলে যাওয়ার ফলে শিল্পের ওপর এই সমস্ত দায় পরল। তারপরে শিল্পা খানিক বাধ্য হয়েই একটি ফুড ট্রাক ব্যবসা শুরু করার ধারণা নেয় কিন্তু তখন সে এই ব্যবসাটি চালাবে কিনা বুঝতে পারেনি।

শিল্পা জানিয়েছিল যে তার স্বামী যখন তাকে ছেড়ে চলে যায় তখন শিল্পার ব্যাংক একাউন্টে ছিল মাত্র 1 লাখ টাকা যা শিল্প অল্পঅল্প করে সংগ্রহ করেছিলশিল্পা আরো বলেছিলেন যে এই টাকা ছাড়া তার কাছে আর কিছুই ছিলনা সে এই টাকার বিনিময় কোন দোকান কিনতে পারতো না বা কিছুদিন দোকান ভাড়া নিয়ে চালাতে পারতো না। তার বাড়ি ঠিক সামনে মাহিন্দ্রা শোরুম ছিল হঠাৎ একদিন সে ভাবল সে অর্থের বিনিময়ে একটি ট্রাক কেন কিনে নিচ্ছেন না এবং সে ট্রাকের মধ্যেই সে তার খাবারের ব্যবসা করবেন।

লোকেরা তাকে সেকেন্ডহ্যান্ড ট্রাক কেনার পরামর’্শ দিল কিন্তু শিল্পা তাদের কথায় কান না দিয়ে নতুন ট্রাক কিনতে শো রুমে গেলেন। সেখানে পৌঁছে তিনি জানতে পেরেছিলেন যে এই ট্রাকটি কিনতে 1 লাখ 18 হাজার টাকা ডাউন পেমেন্ট করতে হবে এছাড়াও যদি তিনি আবার ব্যবসা করেন তার জন্য আলাদা খরচ কিন্তু শিল্পার কাছে মাত্র 1 লাখ টাকায় ছিল। তিনি তার সন্তানের জন্য সেই এক লাখ টাকা রেখেছিলেন যাতে ভবি’ষ্যতে তারসন্তান কোন সমস্যায় না পড়ে। কিন্তু তবুও তিনি সরকারের মহিলা রোজগার উদ্যোগ যোজনার আওতায় ঋণ নিয়েছিলেন এবং বাকি সোনার অলংকার বিক্রি করে ট্রাক কেনার জন্য অর্থ সংগ্রহ করেছিলেন এবং এই ভাবেই শিল্পা তার খাবারের ট্রাকে রান্না শুরু করে এবং ধীরে ধীরে লোকেরা তাদের সম্পর্কে জানতে পারে।

যখন মাহিন্দ্রার মালিক আনন্দ মাহিন্দ্রা শিল্পার এই ঘটনাটি জানতে পারেন তিনি খুব আনন্দিত হয়এবং তাকে সহায়তার আশ্বা’স দেন। আনন্দ মাহিন্দ্রার পোষ্টের পর থেকে তার গ্রাহকের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। আমা’দের শিল্পার এই কাহিনী থেকে অবশ্যই অনুপ্রাণিত হওয়া উচিত। কিভাবে খারাপ সময়ে গু’টিয়ে না গিয়ে দৃঢ়তার সাথে এগিয়ে যেতে হয় তার বাস্তব এবং সবচেয়ে ভালো উদাহরণ শিল্পা ছাড়া আর কেউই ‘হতে পারে না।

Related Posts

© 2024 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy