স্ত্রী ‘বিচ্ছিন্ন’ ভাবে পরকীয়া করলেও দিতে হবে ভরণ পোষণ: দিল্লি হাইকোর্ট

স্ত্রী যদি ‘বিচ্ছিন্নভাবে’ পরকীয়ায় জড়ান, অর্থাৎ স্বামীকে ত্যাগ করে তিনি যদি প্রেমিকের সঙ্গে স্থায়ীভাবে বসবাস না করেন, তাহলে তার ভরণপোষণ বন্ধ করা যাবে না। শুক্রবার (১৬ এপ্রিল) এমন রায় দিয়েছেন দিল্লি হাইকোর্ট।

হাইকোর্টের বিচারপতি চন্দ্রধারী সিং বলেন, ভারতের ভরণপোষণ আইন সম্পর্কে এরই মধ্যে বিভিন্ন হাইকোর্ট যে মত পোষণ করেছেন, তা হলো- স্ত্রী যদি নিয়মিত পরকীয়া সম্পর্কে জড়ান অথবা তার প্রেমিকের সঙ্গে বসবাস করেন, সেক্ষেত্রে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৫ (৪) ধারা প্রযোজ্য হবে।

ভারতীয় দণ্ডবিধির এই ধারাটিতে স্ত্রী, শিশুসন্তান ও বাবা-মায়ের ভরণপোষণের কথা বলা হয়েছে। তাতে উল্লেখ রয়েছে, কোনো স্ত্রী যদি স্বামীকে ছেড়ে প্রেমিকের সঙ্গে বসবাস করেন অথবা যথেষ্ট কারণ ছাড়া স্বামীর সঙ্গে থাকতে অস্বীকার করেন, তাহলে তিনি স্বামীর কাছ থেকে ভরণপোষণের অর্থ পাবেন না।

কিছুদিন আগে দিল্লির পারিবারিক আদালত এক ব্যক্তিকে তার স্ত্রীর ব্যয় বহনের নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন স্বামী।

পিটিশনে তিনি বলেন, তার স্ত্রী নিজের ভরণপোষণ চালাতে সক্ষম। তিনি স্বামীকে ত্যাগ করে অন্য পুরুষের সঙ্গে বসবাস করছেন। সেই নারী ও তার পরিবারের লোকজন আবেদনকারীর বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা করেছেন বলেও উল্লেখ করা হয় ওই পিটিশনে।

স্বামীর অভিযোগ, স্ত্রী চরম নিষ্ঠুরতার পরিচয় দিয়েছেন। এক পুরুষের সঙ্গে তার পরকীয়া সম্পর্ক রয়েছে। তিনি যেহেতু স্বামীকে ছেড়ে চলে গেছেন, তাই তার ভরণপোষণ দিতে পারবেন না।

তবে পর্যাপ্ত তথ্যপ্রমাণের অভাবে উচ্চ আদালত ওই ব্যক্তির আবদেন খারিজ করে দিয়েছেন। বিচারপতি বলেছেন, নিষ্ঠুরতার জন্য কোনো স্ত্রী ভরণপোষণ থেকে বঞ্চিত হতে পারেন না। এমনকি স্ত্রীর নিষ্ঠুরতার জন্য যদি বিয়েবিচ্ছেদও হয়, তবু তিনি ভরণপোষণ পাবেন। তাছাড়া, তাদের সন্তান কোথাও বলেনি যে, তার মা প্রেমিকের সঙ্গে বসবাস করেন।

রায়ের শেষে বিচারপতি বলেন, কোনো ব্যক্তির স্ত্রী, সন্তান বা বাবা-মা যেন অর্থাভাবে না পড়েন, সে জন্যই ভরণপোষণ আইন তৈরি হয়েছে। কিন্তু অনেক সময় সেই দায়িত্ব কাঁধ থেকে নামানোর চেষ্টা করা হয়।

Related Posts

© 2024 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy