সেনা সরলেও মালদ্বীপ থেকে সরবে না নজর, নতুন কৌশল ভারতীয় নৌ বাহিনীর

ভারতীয় সৈন্যদের ফেরত পাঠানো শুরুর কয়েক দিন আগে দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপের নিকটবর্তী ‘‘কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ’’ দ্বীপগুলোর কাছে সামরিক উপস্থিতি জোরদার করার ঘোষণা দিয়েছে ভারতের নৌবাহিনী। কয়েক দিনের মধ্যে মালদ্বীপের কাছের একটি দ্বীপে ভারতীয় নৌবাহিনীর একটি নতুন ঘাঁটি স্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছে সামরিক বাহিনী।

রোববার ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, গত বছর মালদ্বীপের চীনপন্থী প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু ভারতীয় সামরিক বাহিনীর সদস্যদের দেশ থেকে তাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালান। নির্বাচনে ভারত-বিরোধী অবস্থানের কারণে জনসাধারণের বিপুল সমর্থন পেয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন তিনি। মুইজ্জু প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর ভারত ও মালদ্বীপের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভয়াবহ অবনতি ঘটে।

শনিবার এক বিবৃতিতে ভারতের নৌবাহিনী বলেছে, দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপে চীনের ক্রমবর্ধমান উপস্থিতি নিয়ে ভারত সন্দেহ করছে। কারণ পূর্ব-পশ্চিমমুখী আন্তর্জাতিক শিপিং রুটগুলোর অবস্থান এই দ্বীপ দেশের পাশ ঘেঁষে রয়েছে। নতুন ঘাঁটিটি এই অঞ্চলে নয়াদিল্লির নজরদারির সম্প্রসারণ ঘটাবে।

নির্বাচিত হওয়ার পরপরই নয়াদিল্লিকে মালদ্বীপে অবস্থানরত ৮৯ ভারতীয় সৈন্য ও নিরাপত্তা কর্মীকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মুইজ্জু। পরে এই বিষয়ে দুই দেশের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলের বৈঠকও হয়। সেই বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ১০ মার্চের মধ্যে ভারতীয় সৈন্যদের প্রথম ব্যাচটি মালদ্বীপ ত্যাগ করবে। এ ছাড়া বাকি সৈন্যদের আগামী দুই মাসের মধ্যে মালদ্বীপ ত্যাগ করার কথা রয়েছে।

নৌবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভারতের লাক্ষাদ্বীপ দ্বীপপুঞ্জে আগামী ৬ মার্চ নৌবাহিনীর ঘাঁটিটির উদ্বোধন করা হবে। এর মাধ্যমে সেখানে থাকা নৌবাহিনীর ছোট বিচ্ছিন্ন দলটি একটি ‘‘স্বাধীন নৌ ইউনিটে’’ পরিণত হবে।

মালদ্বীপের উত্তরে প্রায় ১৩০ কিলোমিটার দূরে ভারতের লাক্ষাদ্বীপ দ্বীপপুঞ্জের অবস্থান। সেখানকার মিনিকয় দ্বীপে নতুন নৌ ঘাঁটিটি স্থাপন করা হবে; যা মালদ্বীপের একেবারে নিকটতম পয়েন্টে অবস্থিত।

ভারতের নৌবাহিনী বলেছে, লাক্ষাদ্বীপের সর্বদক্ষিণের দ্বীপ মিনিকয়। এই দ্বীপটি আন্তর্জাতিক যোগাযোগের অত্যাবশ্যক সামুদ্রিক পথের চারপাশজুড়ে বিস্তৃত। ঘাঁটিটি ওই অঞ্চলে জলদস্যুতা ও মাদকবিরোধী অভিযান জোরদার করবে। এই ঘাঁটিটি কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ দ্বীপগুলোতে ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তা অবকাঠামো বৃদ্ধির একটি নীতির অংশ হিসেবে স্থাপন করা হচ্ছে।

সূত্র: এএফপি, ইন্ডিয়া টুডে।

Related Posts

© 2024 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy