উপযুক্ত জীবনসঙ্গী নির্বাচনের উপর বিবাহিত জীবনের সাফল্য নির্ভর করে। ভালবেসে বিয়ে করুন কিংবা সম্বন্ধ করে, আপনার জীবনসঙ্গী স্বামী বা স্ত্রী হওয়ার উপযুক্ত কি না সেটা একটু যাচাই করে নেয়া অত্যন্ত জরুরি।
তা কীভাবে করবেন? নিজের হবু জীবনসঙ্গীকে করুন এই ছ’টি প্রশ্ন-
তুমি কেন আমাকে ভালবাসো
সব থেকে জরুরি প্রশ্ন এটি এবং এই প্রশ্নের একটা সঠিক উত্তর আপনার সঙ্গীর থেকে কাম্য। কেউ যদি এই প্রশ্নের উত্তরে বলে ‘তোমাকে ভালবাসি তাই ভালবাসি’, তাহলে সেটি খুব গ্রহণযোগ্য উত্তর হল না। আপনার সঙ্গীর উত্তর থেকে বুঝে নেয়ার চেষ্টা করুন, সে আপনার সবটুকু মিলিয়ে আপনাকে ভালবাসে কি না। শুধু আপনার ক্ষমতা নয়, আপনার অক্ষমতাগুলোকেও সে মেনে নিতে প্রস্তুত কি না, তা বুঝে নিন।
তুমি কেন বাকি জীবনটা আমার সঙ্গে কাটাতে চাও
এই প্রশ্নের উত্তরে অনেকেই বলবেন, ‘আমি তোমাকে ভালবাসি বলে।’ কিন্তু এটাই কি সেই উত্তর যা আপনি শুনতে চাইছেন? সম্ভবত নয়। বরং দেখুন তার উত্তর থেকে তার জীবনে আপনার প্রয়োজনীয়তা, আপনার মূল্য সম্পর্কে কোনো ধারণা তৈরি করতে পারেন কি না। আপনার সঙ্গীর মনেও এই বিষয়টি সম্পর্কে একটা স্বচ্ছ ধারণা গড়ে ওঠা খুব জরুরি।
প্রেমকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য বিয়ের পর তুমি কী করবে
প্রশ্নটা আপাতদৃষ্টিতে বোকা বোকা ঠেকতে পারে। কারণ পরিস্থিতি অনুযায়ী প্রয়োজন বদলে যায়। কিন্তু এই প্রশ্নের সামনে দাঁড়িয়ে আপনার সঙ্গী যদি উত্তর দিতে ইতস্তত করেন, বা বলেন যে, সেসব ভবিষ্যতে দেখা যাবে, তাহলে বুঝতে হবে, আপনাদের সম্পর্কের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে তিনি আদৌ ভাবেন না। সেটা খুব ভাল লক্ষণ নয়।
তুমি কি আমার কষ্টগুলোর ভাগ নিতে প্রস্তুত
জীবন সর্বদা সরলরেখা মেনে চলে না। জীবনে উত্থান-পতন আসবেই। সেক্ষেত্রে যে বিষয়টা বিয়ের আগে জেনে নেয়া সবচেয়ে জরুরি তা হল, যাকে আপনি বিয়ে করতে যাচ্ছেন তিনি আপনার দুঃখ এবং কষ্টগুলোর অংশীদার হতে প্রস্তুত কিনা। আপনার জীবনের অন্ধকার সময়ে তিনি যদি আপনার কষ্টের ভাগ নিতে না পারেন, তাহলে তিনি আপনার উপযুক্ত নন।
তুমি কি আমার জন্য জীবনে আপোস করতে প্রস্তুত
বিয়ে মানেই কিন্তু একগুচ্ছ আপোস। আপনার সঙ্গী সেগুলো করতে প্রস্তুত কি না, তা বিয়ের আগেই জেনে নিন। বিয়ের পরে আপনার ভালবাসার সঙ্গে তার নিজের জীবনের কোন তুচ্ছ চাহিদার দ্বন্দ্ব দেখা দিলে তিনি কোনটিকে গুরুত্ব দেবেন, তা বিয়ের আগেই বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করুন।
সন্তানদের জন্য তুমি কতটুকু ত্যাগ স্বীকার করতে পারবে
বিবাহিত জীবনে সন্তান আরো একটি আপোসের জায়গা। আপনার হবু জীবন সঙ্গীর মধ্যে সন্তানদের জন্য সেই আপোসটুকু করার মতো মানসিকতা রয়েছে তো? তিনি একজন অত্যন্ত দায়িত্বপূর্ণ অভিভাবক হতে প্রস্তুত তো? বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করুন বিয়ের আগেই।
একথা বলা বাহুল্য যে, এই সমস্ত প্রশ্নের ইতিবাচক উত্তর পাওয়ার পরেও কারো কারো বিবাহিত জীবনে নেমে আসতে পারে ব্যর্থতা এবং কেউ এই প্রশ্নগুলির উত্তর দেয়ার ব্যাপারে কতোটা সৎ থাকবেন সেটাও আপনার পক্ষে বুঝে উঠা মুশকিল। তবুও এই প্রশ্নগুলির সুচিন্তিত এবং সৎ উত্তর যদি কেউ দেন, তাহলে বিবাহিত জীবন সম্পর্কে তার মানসিকতা অনেকটাই যাচাই করে নেওয়া সম্ভব।
মনে রাখবেন, এই প্রশ্নমালা কিন্তু একতরফা নয়। এইসব প্রশ্নের সামনে দাঁড় করান নিজেকেও। দাম্পত্য জীবন সম্পর্কে আপনার ধারণাই বা কী, সেটাও বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করুন, বুঝতে দিন আপনার সঙ্গীকেও।
যদি সবকিছু বিচার করে দু’জনকে একে অন্যের উপযুক্ত বলে মনে হয় তবেই এগিয়ে যান বিয়ের দিকে। অন্যথায় নির্দ্বিধায় বেড়িয়ে আসুন সম্পর্ক থেকে। একটা নিষ্ফল সম্পর্ককে বাঁচিয়ে রাখার চেয়ে তা থেকে বেড়িয়ে আসাই বুদ্ধিমানের কাজ নয় কী?