লিভার সিরোসিস হতে পারে ফ্যাটি লিভার থেকে- লিভার বা যকৃৎ হল আমাদের শরীরের অন্যতম বড় অঙ্গ। আর শুধু বড় বললে ভুল হয়ে
যাবে, এই অঙ্গটি আমাদের শরীরের নানা গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে পারে। খাদ্য হজমে সাহায্য করা থেকে শুরু করে, শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ
দূর করে দিতে পারে এই অঙ্গটি। তাই এই অঙ্গের খেয়ালও আমাদের রাখতে হবে। এক্ষেত্রে জানার বিষয় হল, লিভার কিছুটা পরিমাণ ফ্যাট সংরক্ষণ করে রাখে। তবে মুশকিল হয়, যখন এই সামান্য ফ্যাটের পরিমাণে লিভারের উপর বাড়তে থাকে। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক-
ফ্যাটি লিভার ডিজিজ-
লিভারে সামান্য ফ্যাট থাকতেই পারে। তবে লিভারের ভিতরে যদি জমতে থাকে ফ্যাটের বিরাট আস্তরণ, তখন তাকে বলা হয় ফ্যাটি লিভার ডিজিজ। ফ্যাটি লিভার ডিজিজের মূলত দুটি ভাগ- অ্যালকোহোলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ এবং নন অ্যালকোহোলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ। মদ্যপানের কারণে লিভারে ফ্যাট জমলে বলা অ্যালকোহোলিক ফ্যাটিলিভার ডিজিজ। আর অপরদিকে ফ্যাটি লিভারের নেপথ্যে যখন মদ্যপান থাকে না, তখন বলা হয় নন অ্যালকোহোলিক ফ্যটি লিভার ডিজিজ। ফ্যাটি লিভার থেকে ডায়াবিটিস, কোলেস্টেরল, লিভার সিরোসিসের মতো গুরুতর সমস্যা দেখা দিতে পারে। ভুল ধারণা আমরা বেশিরভাগ মানুষই ফ্যাটি লিভার ডিজিজ রোগটির নাম শুনেছি। আর সিংহভাগ মানুষই মনে করি, এই রোগটি মদ্যপানের কারণেই একমাত্র হয়। তবে আমাদের মনে রাখতে হবে, মদ্যপান ছাড়াও শুধুমাত্র জীবনযাত্রা ও খাদ্যাভ্যাসের কারণে হতে পারে ফ্যাটি লিভার ডিজিজ। আর জানলে অবাক হবেন, এই নন অ্যালকোহোলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও অনেক।
ফ্যাটি লিভারের লক্ষণ বহু ক্ষেত্রে এই রোগের তেমন কোনও লক্ষণ দেখা যায় না। তবে কিছু ক্ষেত্রে এই উপসর্গ দেখা দিতে পারে-
১. ক্লান্তি- সারাদিনই আপনাকে ক্লান্তি গ্রাস করে রাখে? তবে অবশ্যই একবার চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। আপনার ফ্যাটি লিভার ডিজিজ হলেও হতে পারে।
২. পেটে ব্যথা- তলপেটে ব্যথা হতে পারে। চিনচিনে বা খুব ব্যথা হতে পারে। এমন লক্ষণ দেখা দিলে বুঝতে হবে কোনও সমস্যা রয়েছে। তখন চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। ৩. সারাদিন ঘুমঘুম ভাব- আপনার কাজ করতে একদম ভালো লাগছে না। শুধু শুয়ে পড়তে ইচ্ছে করছে। এমন পরিস্থিতিতে অবশ্যই আপনাকে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। সেক্ষেত্রে হতে পারে ফ্যাটি লিভার ডিজিজ।
কী ভাবে নন অ্যালকোহোলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজের সমস্যা মেটাবেন?
নন অ্যালকোহোলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ কোনওভাবেই ক্রনিক রোগ নয়। একটু আধটু চেষ্টা করলে এই সমস্যার সমাধান হতে পারে। সেক্ষেত্রে মেনে চলুন এই নিয়মগুলি-
১. তেল-ঝাল-মশলা ছাড়ুন। এই ধরনের খাবার খাওয়া চলবে না।
২. ফ্যাট থাকা কোনও খাবার আপাততনয়।
৩. মিষ্টি থেকে দূরে থাকুন। তবেই সমস্যা কমবে।
৩. বেশি করে ফাইবার জাতীয় খাবার খান। খেতে হবে ডালিয়া, ওটস, ঢেঁকি ছাঁটা চাল ইত্যাদি।
৪. ওজন কমান।
৫. ভুঁড়ি কমাতে হবে।
৬. রোজ করুন ব্যায়াম। দিনে অন্তত ৩০ মিনিট ব্যায়াম করতেই হবে।
৭. দুশ্চিন্তা দূর করুন। প্রয়োজনে করতে হবে প্রাণায়াম।