সম্পর্ক ভাঙলেই বাড়ছে ফৌজদারি আইনের অপব্যবহার, পর্যবেক্ষণ এলাহাবাদ হাইকোর্টের

সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার কারণেই ফৌজদারি আইনের অপব্যবহার বাড়ছে বলে পর্যবেক্ষণ এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি কৃষ্ণাণ পাহলের। সম্প্রতি একটি মামলার শুনানিতে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

মামলাটি ছিল ৪২ বছর বয়সী বিবাহিত অরুণ কুমার মিশ্রের বিরুদ্ধে ২৫ বছর বয়সী এক তরুণীর ধর্ষণের অভিযোগ। তরুণীর অভিযোগ, অরুণ কুমার বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েও শেষ পর্যন্ত সরে যান এবং ধর্ষণের ভিডিও তুলে রেখে তাঁকে ব্ল্যাকমেল করতেন।

তবে অভিযুক্ত অরুণ কুমারের আইনজীবী আদালতে জানান, এফআইআর দায়ের করতে ছয় মাস বিলম্ব হয়েছে। তিনি আরও বলেন, তাঁদের দুজনের মধ্যে সম্মতির ভিত্তিতে সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল এবং তাঁরা স্বেচ্ছায় বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ করেছেন ও হোটেলে থেকেছেন।

অভিযোগকারী তরুণী অভিযুক্তকে ‘ক্যাসানোভা’ আখ্যা দিয়ে দাবি করেন, অরুণ বিভিন্ন সময়ে বহু নারীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন এবং তিনবার বিয়েও করেছেন। পাশাপাশি, ধনী ব্যক্তি হওয়ায় নিজের সম্পদের অপব্যবহার করে অন্যদের ফাঁসানোর অভিযোগও আনেন তিনি।

উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারপতি কৃষ্ণাণ পাহল বলেন, “এটা ক্রমবর্ধমানভাবে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, ব্যক্তিগত ও মানসিক বিরোধকে ফৌজদারি আইনের মাধ্যমে অপরাধমূলক রং দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের ব্যর্থতার পরে।”

এরপরই উচ্চ আদালত অরুণ কুমার মিশ্রের জামিন মঞ্জুর করেন। বিচারপতি পাহল বলেন, “অভিযুক্ত ব্যক্তির আগে তিনটি বিয়ে ছিল এবং অভিযোগকারী মহিলা সেই বিষয়ে সম্পূর্ণ অবগত ছিলেন। তা সত্ত্বেও তিনি তাঁর সাথে সম্পর্ক স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই সম্পর্ক পরস্পরের সম্মতিতে গড়ে উঠেছিল। এখন সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার কারণেই ফৌজদারি মামলা করা হয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এখন এরকম হচ্ছে।”

আদালতের এই পর্যবেক্ষণ বর্তমান সমাজে ব্যক্তিগত সম্পর্ক এবং আইনি পদক্ষেপের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরেছে। সম্পর্ক ভেঙে গেলে ফৌজদারি আইনের অপব্যবহারের প্রবণতা বাড়ছে, যা আদলতের নজরে এসেছে।

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy