শিলিগুড়ির সংলগ্ন এলাকায়, কমোডের পাশে মিলল বিরিয়ানির হাঁড়ি, বন্ধ হল দোকান

কমোডের ঠিক পাশেই রাখা ছিল বিরিয়ানির বিশাল হাঁড়ি, সাথে কাঁচা মাংস আর রান্না করা ভাত! শিলিগুড়ির একটি রেস্তোরাঁয় আচমকা অভিযানে গিয়ে এমন অস্বাস্থ্যকর দৃশ্য দেখে রীতিমতো হতবাক হয়ে গেলেন সরকারি আধিকারিকরা। এর পরপরই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ওই রেস্তোরাঁটি।

সম্প্রতি শিলিগুড়ির এক গ্রাহক অভিযোগ করেছিলেন যে শহরের একটি রেস্তোরাঁর বিরিয়ানিতে পোকা পাওয়া গেছে। এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। শুক্রবার শহরের ছোট-বড় হোটেল, রেস্তোরাঁ ও বিরিয়ানির দোকানগুলোতে একযোগে অভিযান চালানো হয়। শিলিগুড়ি পুরনিগম, দমকল, পুলিশ, খাদ্য সুরক্ষা, ক্রেতা সুরক্ষা এবং লিগ্যাল মেট্রোলজি দফতরের আধিকারিকরা এই যৌথ অভিযানে অংশ নেন।

শিলিগুড়ি কলেজ পাড়ার বাঘাযতীন পার্ক সংলগ্ন এলাকায় একাধিক রেস্তোরাঁয় তল্লাশি চালানো হয়। সেখানে একটি রেস্তোরাঁর শৌচাগারে কমোডের ঠিক পাশেই বিরিয়ানির হাঁড়ি, মাংস ও ভাত দেখতে পান আধিকারিকরা। এই shocking দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করার পর ওই দোকানের বিরুদ্ধে অবিলম্বে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় এবং রেস্তোরাঁটি সিল করে দেওয়া হয়।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, চলতি সপ্তাহেই শিলিগুড়ি সংলগ্ন চম্পাসারির একটি বিরিয়ানির দোকানে মাংসে পোকা পাওয়ার ঘটনায় এলাকায় তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল। সে সময় পুরনিগম ও প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। এর প্রায় মাসখানেক আগে মেয়র গৌতম দেবের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের লেকটাউনের একটি বিরিয়ানি দোকানেও একই ধরনের অভিযোগ উঠেছিল এবং সেই দোকানটি সিল করার পাশাপাশি তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।

বারবার এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটায় শুক্রবার থেকে বৃহত্তর অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। ছয়টি সরকারি দফতরের আধিকারিকরা এদিন কলেজ পাড়া, আশ্রম পাড়াসহ শহরের বিভিন্ন এলাকার দোকানগুলোতে অভিযান চালান। খাদ্যের গুণগত মান, অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা, পরিমাপক যন্ত্রের সঠিকতা এবং সামগ্রিক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে খতিয়ে দেখা হয়। একটি রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দেওয়ার পাশাপাশি বেশ কয়েকটি দোকানে নিয়ম লঙ্ঘনের জন্য সতর্ক করা হয়েছে।

শিলিগুড়ি পুরনিগমের খাদ্য বিভাগের এসআই রাজ ঘোষ জানান, বিভিন্ন দফতর একত্রিত হয়ে অভিযান চালাচ্ছে। বেশ কিছু ত্রুটি খুঁজে পাওয়া গেছে এবং একটি রেস্তোরাঁ বন্ধ করা হয়েছে। এই অভিযান লাগাতার চলবে এবং যেখানেই ত্রুটি মিলবে, সেখানেই আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুরনিগমের আরেক আধিকারিক কৌশিক মোদক বলেন, মূলত কী ধরনের খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে, সেগুলি কী উপকরণ দিয়ে তৈরি এবং তার মান ও পরিচ্ছন্নতা যাচাই করা হচ্ছে।

এদিকে, যে রেস্তোরাঁটি সিল করা হয়েছে তার মালিক অর্জুন রায় অবশ্য নিজের পক্ষে সাফাই দিয়ে বলেছেন যে সেদিন দোকান বন্ধ রেখে তারা পরিষ্কার পরিছন্নতার কাজ করছিলেন। আধিকারিকরা হঠাৎ চলে আসায় কর্মীরা ভয়ে খাবারগুলো শৌচাগারে লুকিয়ে রেখেছিল। তিনি দাবি করেন, তারা কখনোই বাসি খাবার বিক্রি করেন না।

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy