বর্তমান বিশ্বে ডায়াবেটিস আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। তবুও এই রোগ নিয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা নেই। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত অনেক মানুষই জানেন না যে তাদের শরীরের ভেতর রোগ বাসা বেঁধে রয়েছে।
তবে ডায়াবেটিস শনাক্তের পর তা নিয়ন্ত্রণে না রাখতে পারলে হতে পারে বিপদ! কারণ অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস শরীরের গুরুত্বপূর্ণ না অঙ্গের ক্ষতি করে।
তাই ডায়াবেটিস রোগীসহ সবাইকেই এই রোগ নিয়ে আরও সতর্ক ও সচেতন হতে হবে। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক অনিয়ন্ত্রিত সুগার কোন কোন অঙ্গের ক্ষতি করে ও কী কী রোগের ঝুঁকি বাড়ায়-
>> দীর্ঘদিন ডায়াবেটিসে ভুগলে হার্ট বা শরীরের অন্যান্য রক্তনালির ভেতর প্রদাহ হয়। এই প্রদাহ থেকে হার্ট অ্যাটাক, হার্ট ফেলিওর বা অন্যান্য হার্টের রোগের ঝুঁকি বাড়ে।
আবার হার্টের পাশাপাশি পায়ের রক্তনালিতেও দেখা দিতে পারে একই সমস্যা। এছাড়া অনেক ক্ষেত্রে মাথায় একই ঘটনা হয়ে স্ট্রোক হতে পারে।
>> ডায়াবেটিস কিডনির ব্যাপক ক্ষতি করে। এক্ষেত্রে প্রথমে কিডনি থেকে প্রোটিন বের হতে শুরু করে। ফলে মানুষ প্রস্রাব করার সময় ফেনা হয়।
এরপর ধীরে ধীরে সমস্যা এগিয়ে ক্রনিক কিডনি ডিজিজে পৌঁছে যায়। তাই প্রথম থেকেই ডায়াবেটিসের চিকিৎসা না হলে কিডনি ফেলিওর পর্যন্ত হতে পারে।
>> শরীরে বিভিন্ন নার্ভ বা স্নায়ুতেও খারাপ প্রভাব ফেলে ডায়াবেটিস। এক্ষেত্রে স্নায়ু প্রয়োজনীয় পুষ্টি পায় না। এই সমস্যার নাম ডায়াবেটিক নেফ্রোপ্যাথি।
এর ফলে স্নায়ু ধীরে ধীরে নিজের কার্যক্ষমতা হারাতে থাকে। এ সমস্যা মূলত পা থেকে শুরু হয়। ফলে পায়ে শক্তি থাকে না। প্রায় পা ঝিনঝিন করা হতে পারে নার্ভের সমস্যা।
>> ডায়াবেটিস দুইভাবে আপনার পায়ের ক্ষতি করতে পারে। প্রথমত, স্নায়ুর ক্ষতি করার মাধ্যমে। আর দ্বিতীয়টি হলো পায়ের দুর্বল রক্ত সঞ্চালন।
দুর্বল রক্ত প্রবাহের কারেণ ঘা বা সংক্রমণ নিরাময় কঠিন করে তোলে। যাকে বলা হয় ডায়াবেটিক ফুট। এই সমস্যা দেখা দিলে আক্রান্ত পা কেটেও ফেলতে হতে পারে।
>> চোখ হলো মানুষের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। ডায়াবেটিস শরীরের এই গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গেরও ক্ষতি করে। ডায়াবেটিস থাকলে চোখের রেটিনার পেছনে পানি জমে।
এছাড়া অন্যান্য কিছু ক্ষতিকর পদার্থও জমে সেখানে। তাই প্রতিটি মানুষকে অবশ্যই বিষয়টি নিয়ে হয়ে যেতে হবে সাবধান।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ডায়াবেটিস নিয়ে একেবারেই হেলাফেলা করা উচিত নয়। এক্ষেত্রে নিয়মমতো ওষুধ খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।
এর পাশাপাশি সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও শরীরচর্চা জরুরি। আর অবশ্যই ডায়াবেটিস রোগীর উচিত নিয়মিত রক্তে শর্করার মাত্রা মাপা ও চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া।