রয়েছে ৬ মাসের খাবার ও জ্বালানি, তারপর কি হবে শ্রীলঙ্কার? জেনেনিন সর্বশেষ পরিস্থিতি

ভয়াবহ আর্থিক সংকটে পড়েছে শ্রীলঙ্কা। দিন যত যাচ্ছে পরিস্থিতি যেন আরও খারাপের দিকেই যাচ্ছে। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস এখন হাতের নাগালের বাইরে। দেশটিতে খাবার, জ্বালানি, ওষুধসহ সব ধরনের প্রয়োজনীয় জিনিসের সংকটে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ।

এমন অবস্থায় জরুরি ভিত্তিতে দেশটির আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন। লঙ্কান প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে জানিয়েছেন, আগামী ৬ মাসের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের জন্য তার দেশের কমপক্ষে ৫শ কোটি ডলার প্রয়োজন।

গত ৭০ বছরের বেশি সময়ে মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে দেশটি। পার্লামেন্টে এক ভাষণে রনিল বিক্রমাসিংহে বলেন, মৌলিক প্রয়োজনীয় জিনিস যেমন খাবার, জ্বালানি এবং সারের জন্য এই অর্থ প্রয়োজন।

গত মে মাসে বিদেশি ঋণের কিস্তি প্রদান স্থগিত রাখার ঘোষণা দেয় শ্রীলঙ্কা। দেশটিতে প্রথমবারের মতো এমন ঘটনা ঘটেছে।

এই দ্বীপরাষ্ট্রের জনসংখ্যা প্রায় ২ কোটি ২০ লাখ। প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে বলেন, জ্বালানি আমদানির জন্য ৩৩০ কোটি ডলার, খাবারের জন্য ৯০ কোটি ডলার, সারের জন্য ৬০ কোটি ডলার এবং রান্নার গ্যাসের জন্য ২৫ কোটি ডলার প্রয়োজন।

ভারতের এক্সিম ব্যাংকের কাছ থেকে সাড়ে ৫ কোটি ডলারের ঋণ পাচ্ছে শ্রীলঙ্কা। দেশটির প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, জাতিসংঘও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কাছ থেকে শ্রীলঙ্কার জন্য তহবিল সংগ্রহের পরিকল্পনা করছে। খাদ্য, কৃষি এবং স্বাস্থ্য সেবায় ৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।

১৯৪৮ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা অর্জনের পর প্রথমবার এমন আর্থিক সংকট মোকাবিলা করছে শ্রীলঙ্কা। করোনা মহামারি, জ্বালানির দাম বৃদ্ধি এবং কর ছাড়ের কারণে দেশটির এমন পরিস্থিতি হয়েছে।

২০২৬ সালের মধ্যে শ্রীলঙ্কাকে বিদেশি ঋণের আড়াই হাজার কোটি ডলার পরিশোধ করতে হবে। এর মধ্যে চলতি বছরই দিতে হবে অন্তত ৭০০ কোটি ডলার। অথচ এই মুহূর্তে দেশটির হাতে রয়েছে মাত্র পাঁচ কোটি ডলার, যার পরিমাণ ৪৩০ কোটি টাকা মাত্রা।

২০১৯ সালের শেষে শ্রীলঙ্কার রিজার্ভ ছিল ৭৬০ কোটি ডলার, ২০২০ সালের শেষ নাগাদ তা কমে দাঁড়ায় ৫৭০ কোটি ডলারে। মহামারির মধ্যে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি হওয়ায় এ অবস্থা হয়েছে দেশটির।

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy