রাশিয়া -ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব, উপকূলে ভেসে আসছে মৃত ডলফিন!

কয়েক সপ্তাহ ধরেই কৃষ্ণসাগর উপকূলে ভেসে আসছে মৃত ডলফিন। প্রশ্ন উঠছে, কি কারণে মৃত ডলফিন কৃষ্ণসাগর উপকূলে ভেসে আসছে?
প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে বিজ্ঞানীরা ভেবেছিলেন, রুশ-ইউক্রেন নৌবাহিনীর সংঘাতে সমুদ্রের পানিতে ধারাবাহিক বিস্ফোরণ ও দূষণের কারণেই তারা মারা যাচ্ছে। কিন্তু ডলফিনের গণমৃত্যুর কারণ হিসেবে সামনে আসছে অন্য তত্ত্বও। কৃষ্ণসাগরে রুশ নৌঘাঁটিগুলোর পাহারাদার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ডলফিনগুলোকে ইউক্রেন বাহিনী পরিকল্পিতভাবে খুন করছে বলে প্রশ্ন উঠেছে।

এপ্রিলের তৃতীয় সপ্তাহে ইউক্রেন সেনার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কৃষ্ণসাগরে মোতায়েন রুশ রণতরী মস্কোভার সলিল সমাধি ঘটে। তারপরই ক্রাইমিয়ার সেভাস্তিপোলসহ কৃষ্ণসাগরের কয়েকটি রুশ নৌঘাঁটির নিরাপত্তায় বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ডলফিন বাহিনী নিয়োগ করেছিল মস্কো। গত দু’সপ্তাহে সেখানকার উপকূলবর্তী এলাকায় শতাধিক ডলফিনের দেহ দেখা গিয়েছে।

যদিও তাদের দেহে কোনো আঘাতের চিহ্ন মেলেনি বলে তুরস্কের একটি গবেষণা সংস্থার বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন।

সামরিক কাজে অতীতেও ডলফিন ব্যবহার করেছে রাশিয়া। ২০১৮ সালে সিরিয়ার যুদ্ধের সময় টারটাস নৌঘাঁটিতে ডলফিন বাহিনীকে মোতায়েন করা হয়েছিল। উপগ্রহচিত্রে সেই ছবি ধরাও পড়েছিল। বস্তুত, ষাটের দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নের সময়েই এ বুদ্ধিমান প্রাণীগুলোকে সামরিক কাজের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হয়েছিল। ক্রাইমিয়ার সেভাস্তিপোলেই ছিল সেই প্রশিক্ষণকেন্দ্র।

শত্রুপক্ষের ডুবুরিকে চিহ্নিত করা বা সমুদ্রের নীচে বিস্ফোরক চিহ্নিত করা এবং তা উদ্ধার করে নিয়ে আসার কাজে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় ডলফিনগুলোকে। এমনকি, সমুদ্রের তলায় বিস্ফোরক বসানোর জন্য তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

২০১৪ পর্যন্ত ক্রাইমিয়া ছিল ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে। ফলে ডলফিন প্রশিক্ষণকেন্দ্রের কথা কিভের অজ্ঞাত নয়। গত সপ্তাহের গোড়া থেকে স্নেক আইল্যান্ডসহ কৃষ্ণসাগরের কয়েকটি রুশ নৌঘাঁটি দখলের জন্য অভিযান শুরু করেছে ভলোদিমির জেলেনস্কির অনুগত বাহিনী। ঘটনাচক্রে তখন থেকেই বাড়াতে শুরু করেছে ডলফিনের মৃত্যুর হার।

Related Posts

© 2024 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy