রাশিয়া বিশ্বের সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী হুমকি: প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি

রাশিয়াকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী হুমকি বলে আখ্যায়িত করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তার দাবি, বিশ্বের অন্য কোনো রাষ্ট্রে রাশিয়ার মতো সন্ত্রাসবাদের হুমকি নেই। ইউক্রেনের মধ্যাঞ্চলীয় ভিনিৎসিয়া শহরে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর হামলায় কমপক্ষে ২৩ জন নিহত হওয়ার পর বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) সন্ধ্যায় প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি একথা বলেন।

ভিনিৎসিয়া শহরে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত ২৩ জনের মধ্যে ৩ জনই শিশু এবং তাদের বয়স ১০ বছরের নিচে। শুক্রবার (১৫ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতাভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।

বৃহস্পতিবার নিজের দৈনিক ভাষণে ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘দুর্ভাগ্যক্রমে, (রুশ হামলায় হতাহতের এই সংখ্যা) এখনও চূড়ান্ত নয়। ধ্বংসাবশেষ পরিষ্কারের কাজ চলছে। হামলার পর থেকে বহু মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন বলে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। হাসপাতালে যারা ভর্তি হয়েছেন তাদের অনেকে গুরুতর আহত।’

ইউক্রেন অভিযোগ করেছে যে, মধ্যাঞ্চলীয় ভিনিৎসিয়া শহরে রুশ বাহিনীর চালানো আক্রমণটি কালিবর ক্রুজ মিসাইল দিয়ে করা হয়েছে। জেলেনস্কি বলছেন, রাশিয়ার নিক্ষেপ করা এসব মিসাইলের একটি মেডিকেল সেন্টারে আঘাত করেছে। তিনি ৪০ বছর বয়সী নাটালিয়া এবং ৬১ বছর বয়সী ভলোদিমিরসহ ভেতরে থাকা এবং হামলার পর এখনও নিখোঁজ কিছু লোকের নামও উল্লেখ করেছেন।

প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেছেন, ‘ঈশ্বর না করুন, কেউ যদি ডালাস বা ড্রেসডেনের একটি মেডিকেল সেন্টারে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়, তাকে কী বলা হবে? এটাকে কি সন্ত্রাসবাদ বলা হবে না?’

জেলেনস্কির ভাষায়, ‘সন্ত্রাস একটি ভাইরাস। এবং যদি সন্ত্রাসীদের মধ্যে কেউ শাস্তি না পায় তবে তা অন্যদের উৎসাহিত করে।’

এদিকে রাশিয়ার সর্বশেষ এই হামলাকে ‘প্রকাশ্য সন্ত্রাসবাদ’ বলে আখ্যায়িত করেছেন ইউক্রেনের এই প্রেসিডেন্ট। দ্য হেগে ইউরোপীয় কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে এক ভাষণে জেলেনস্কি বলেন, ‘(মধ্য ইউক্রেনের ভিনিৎসিয়া শহরে) আটটি রকেট দিয়ে হামলা চালানো হয়। এর মধ্যে দু’টি শহরের কেন্দ্রস্থলে আঘাত হেনেছে। রুশ এই হামলায় ২০ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে তিনজন শিশুও রয়েছে। এছাড়া সেখানে আরও বহু মানুষ আহত হয়েছেন।’

অবশ্য উদ্ধারকারীরা পরে জানান, রাশিয়ার এই হামলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৩ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া আরও ৩৯ জনের সন্ধান পেতে উদ্ধার কাজ অব্যাহত রয়েছে বলেও জানানো হয়।

এছাড়া রাশিয়ার আক্রমণের জন্য একটি ‘বিশেষ ট্রাইব্যুনাল’ চালু করতে ইউরোপীয় এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের কর্মকর্তাদের অনুরোধ করেছেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি।

তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত তার এখতিয়ারের অধীনে যুদ্ধাপরাধ, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ, গণহত্যার মতো অপরাধের জন্য দোষীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনবে।’

Related Posts

© 2024 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy