ইউক্রেনে স্থায়ী শান্তি ফেরাতে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এক শান্তি পরিকল্পনা উল্লেখ করেছেন। আগামী সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময়ে তিনি সেই পরিকল্পনা উন্মোচন করতে পারেন।
রাশিয়ার লাগাতার হামলার মুখেও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, দেশে শান্তি জন্য ‘জেতার পরিকল্পনা’ প্রস্তুত হয়ে গেছে। এই পরিকল্পনা আসন্ন জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ ও সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সামনে উপস্থাপন করবেন বলে গত মাসেই ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি।
সুইজারল্যান্ডে শান্তি সম্মেলনে ইউক্রেন রাশিয়ার সেনাদের নিজস্ব ভূখণ্ড থেকে পুরোপুরি প্রত্যাহার এবং হামলা চালানোর জন্য রাশিয়ার জবাবদিহিতার শর্ত আরোপ করেছিল। চলতি বছরেই রাশিয়ার অংশগ্রহণসহ আরও এক শান্তি সম্মেলন আয়োজনের চেষ্টা চলছে। জেলেনস্কি নভেম্বর মাসেই এমন সম্মেলনের পূর্বাভাস দিয়েছেন।
কী আছে এই পরিকল্পনায়? এ বিষয়ে কিছুটা ইঙ্গিত দিয়েছেন জেলেনস্কি। বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) নিয়মিত ব্রিফিংয়ে ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ইউক্রেনের কাছে গ্রহণযোগ্য শর্তাবলী তৈরিই এই পরিকল্পনার লক্ষ্য।
জেলেনস্কি বলেন, আজ এটা বলা যেতে পারে যে, আমাদের বিজয় পরিকল্পনা সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত। সব পয়েন্ট, মূল ফোকাসের সব জায়গা এবং পরিকল্পনার সব প্রয়োজনীয় বিশদ সংযোজন সংজ্ঞায়িত করা হয়ে গেছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো এটি বাস্তবায়নের সংকল্প।
তিনি বলেন, শান্তির কোনো বিকল্প নেই। যুদ্ধের স্থবিরতা বা অন্য কোনো কারসাজি, যা রুশ আগ্রাসনকে অন্য পর্যায়ে নিয়ে যাবে, সেটি গ্রহণযোগ্য হবে না।
এর আগে, গত মঙ্গলবার ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন, শীর্ষ কমান্ডারদের সঙ্গে একটি বৈঠক সামরিক পরিপ্রেক্ষিতে ‘ভালো এবং শক্তিশালী বিষয়বস্তু’ তৈরি করেছে, যা ‘অবশ্যই ইউক্রেনকে উল্লেখযোগ্যভাবে শক্তিশালী করতে পারে’।
এদিন জেলেনস্কি আলোচনার ভিত্তি হিসেবে একটি শান্তি পরিকল্পনা ব্যবহার করেন, যা তিনি ২০২২ সালের শেষের দিকে উপস্থাপন করেছিলেন। ওই পরিকল্পনায় সব রুশ সৈন্য প্রত্যাহার, ইউক্রেনের সোভিয়েত-পরবর্তী সীমানা পুনরুদ্ধার এবং রাশিয়াকে তার আক্রমণের জন্য জবাবদিহি করার একটি উপায়ের আহ্বান জানানো হয়েছিল।
পরিকল্পনাটি ছিল গত জুন মাসে সুইজারল্যান্ড আয়োজিত ‘শান্তি শীর্ষ সম্মেলনের’ কেন্দ্রবিন্দু। তবে ওই সম্মেলনে রাশিয়াকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এটিকে ‘অর্থহীন’ বলে উল্লেখ করেছিল মস্কো।
রাশিয়ার সেনারা ইউক্রেনের প্রায় ২০ শতাংশ ভূখণ্ড দখলে রাখাকালীন কোনো ধরনের আলোচনার সম্ভাবনা প্রত্যাখ্যান করেছেন জেলেনস্কি।
রাশিয়া বারবার বলেছে, তারা আলোচনায় ইচ্ছুক। কিন্তু গত মাসে দেশটির কুরস্ক অঞ্চলে ইউক্রেনীয় বাহিনী আক্রমণ করার পর আলোচনার বিষয়টি অস্বীকার করেছিল মস্কোও।
সূত্র: ডয়েচে ভেলে