মুরগি রপ্তানি বন্ধ করলো মালয়েশিয়া, বিপদে সিঙ্গাপুর

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র সিঙ্গাপুরের মানুষের জাতীয় খাবার হলো ‘চিকেন রাইস’। রেস্টুরেন্ট কিংবা সড়কের স্টল যেখানেই চোখ রাখুন না কেন, চোখে পড়বে চিকেন রাইসের আয়োজন। কিন্তু সম্প্রতি এই জাতীয় খাবার নিয়ে সংকটে পড়েছে দেশটি।

সিঙ্গাপুরে চিকেন বা মুরগির পুরোটাই সরবরাহ হয় আমদানির মাধ্যমে। সম্প্রতি প্রতিবেশী মালয়েশিয়া মুরগি রপ্তানি নিষিদ্ধ করার ফলে বিপদে পড়েছে দেশটি। মুরগির সংকট তৈরি হওয়ায় খাবারের দামও বেড়ে গেছে কয়েকগুণ।

মালয়েশিয়ার রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা হলো ক্রমবর্ধমান বিশ্বব্যাপী খাদ্য ঘাটতির সর্বশেষ পরিস্থিতি। ইউক্রেন-রাশিয়ার চলমান যুদ্ধ, বৈরি আবহাওয়া পরিস্থিতি ও করোনা মহামারির কারণে বিশ্বে খাদ্য সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে।

‘ওকে চিকেন রাইস’ নামে সাতটি খাবার স্টলের মালিক ড্যানিয়েল ত্যান বলেন, মালয়েশিয়ার নিষেধাজ্ঞা তার মতো বিক্রেতাদের জন্য ‘বিপর্যয়’ ডেকে এনেছে। ‘নিষেধাজ্ঞার মানে আমরা আর বিক্রি করতে পারছি না।’ এটা ম্যাকডোনাল্ডস-এর মতো যেখানে কোনো বার্গার নেই,’ বলেন তিনি।

ওই খাবার বিক্রেতা আরও বলেন যে, তার স্টলগুলোর জন্য সাধারণত মালয়েশিয়া থেকে জীবন্ত পাখিগুলো আনা হতো। কিন্তু এক সপ্তাহের মধ্যে হিমায়িত মুরগির ব্যবহার করতে হবে ফলে গ্রাহকরা চিকেন রাইসের গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারেন। যার কারণে বিক্রি কমে যাবে।

এশিয়ার মধ্যে ধনী দেশগুলোর একটি হলো সিঙ্গাপুর। ৭৩০ বর্গ কিলোমিটারের দেশটি খাদ্য, জ্বালানিসহ অন্যান্য পণ্য আমদানির ওপর নির্ভরশীল। আর মালয়েশিয়া প্রতি মাসে ৩৬ লাখ মুরগি রপ্তানি করে।

সিঙ্গাপুর ফুড এজেন্সির (এসএফএ) হিসাব বলছে, দেশটি মালয়েশিয়া থেকে ৩৪ শতাংশ, ব্রাজিল থেকে ৪৯ শতাংশ ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১২ শতাংশ মুরগি আমদানি করে থাকে।

এসএফএ-র তরফে আরও বলা হয় ব্রাজিল থেকে হিমায়িত মুরগি দিয়ে ঘাটতি পূরণ করা যেতে পারে এবং ভোক্তাদের মাছের মতো অন্যান্য প্রোটিনযুক্ত খাবার পরিবেশন বিকল্প হিসেবে বেছে নেওয়া যেতে পারে।

খোদ মালয়েশিয়াতেই সব পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। ফলে অভ্যন্তরীণ উৎপাদন ও খরচ স্থিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত মুরগি রপ্তানি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার।

Related Posts

© 2024 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy