
কলকাতা মেট্রো ভারতের গর্বের প্রতীক। দেশের প্রথম মেট্রো পরিষেবা চালু হয়েছিল এই শহরেই। এমনকি, দেশের প্রথম জলতলের নিচ দিয়ে মেট্রো চলাচলের নজিরও গড়েছে কলকাতা। তবে সাম্প্রতিক এক তথ্য উদ্বেগ বাড়াচ্ছে শহরবাসীর মধ্যে।
আত্মহত্যার ঘটনায় রেকর্ড গড়ল কলকাতা মেট্রো
লোকসভায় এক প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছেন যে, গত পাঁচ বছরে কলকাতা মেট্রোয় মোট ১৯টি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। যা দেশের অন্য মেট্রো পরিষেবার তুলনায় সর্বাধিক।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী:
- ২০২০ সালে – ১ জন
- ২০২২ সালে – ৫ জন
- ২০২৩ সালে – ৪ জন
- ২০২৪ সালে – ৭ জন (সবচেয়ে বেশি)
- ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত – ২ জন
এই তথ্য প্রকাশ্যে আসার পর শহরবাসীর মধ্যে চরম উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
সুরক্ষা ব্যবস্থা: স্লাইডিং দরজা ও গার্ডরেল
রেলমন্ত্রী জানিয়েছেন, সল্টলেক সেক্টর ৫ থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর ১২টি স্টেশনে ইতিমধ্যেই স্লাইডিং দরজা বসানো হয়েছে। এছাড়া, দক্ষিণেশ্বর থেকে কবি সুভাষ পর্যন্ত রুটের স্টেশনগুলিতে গার্ডরেল বসানোর জন্য পাইলট প্রকল্প চালু করা হয়েছে।
রেল মন্ত্রকের ব্যর্থতা ঢাকতেই গার্ডরেল?
এই প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী বলেছেন, আত্মহত্যার ঘটনা ঠেকাতে গার্ডরেল বসানো কোনো স্থায়ী সমাধান নয়। এর পাশাপাশি যাত্রীদের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকেও গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
কলকাতা মেট্রো নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
বর্তমানে কলকাতা মেট্রো ব্লু, গ্রিন, পার্পেল, অরেঞ্জ লাইনে চলাচল করছে। যদিও যাত্রীদের মধ্যে পরিষেবা নিয়ে কিছু ক্ষোভ রয়েছে, তবুও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মেট্রোতে যাত্রীদের নির্ভরতা বাড়ছে। তবে আত্মহত্যার ঘটনা নিয়ন্ত্রণে না আনতে পারলে এই উন্নয়নের ছবিতে দাগ পড়তে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
পরবর্তী পদক্ষেপ কী?
এই পরিস্থিতিতে রেল মন্ত্রক কীভাবে এই সংকট মোকাবিলা করবে, তা এখন দেখার বিষয়। কলকাতা মেট্রো কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সচেতনতা প্রচার চালানোর কথাও ভাবছে। প্রশাসনের আশ্বাস, ভবিষ্যতে এই ধরণের ঘটনা কমানোর জন্য আরও কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে।