পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি বিশেষ পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাঙালি লেখক ও লোকসংস্কৃতি গবেষক রত্না রশিদ বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রতিবাদস্বরূপ রত্না রশিদ তাঁকে দেওয়া বাংলা আকাদেমির একটি পুরস্কার ফিরিয়ে দিয়েছেন।
রত্না রশিদ বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১৯ সালে বাংলা আকাদেমি থেকে পাওয়া ‘অন্নদাশঙ্কর রায় সম্মান’ ফিরিয়ে দেওয়ার কথা জানিয়েছেন। বাংলা আকাদেমির সভাপতিকে চিঠি লিখে সে কথা জানিয়েছেন বর্ধমানের রত্না রশিদ বন্দ্যোপাধ্যায়।
শুধু তাই নয়, ওই চিঠিতে তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আকাদেমির সম্মান দেওয়ার বিষয়ে নিজের ক্ষোভের কথাও জানান। তিনি লেখেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীকে এ পুরস্কার প্রদানের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি শুধু যে ন্যক্কারজনক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে তাই নয়, এর মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যের সত্যিকারের নিরলস চর্চারত সব মানুষকে অপমান করেছে।’
২০১৯ সালে ২৬ জুলাই বাংলা আকাদেমি থেকে অন্নদাশঙ্কর স্মারক সম্মান পেয়েছিলেন রত্না রশিদ বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তিনি চিঠিতে লেখেন, ‘অন্নদা শঙ্কর স্মারক সম্মান ফিরিয়ে দিচ্ছি।’ সে সম্মানের সঙ্গে দেওয়া স্মারক বাংলা আকাদেমির ঠিকানায় অবিলম্বে পাঠিয়েও দেবেন বলে চিঠিতে জানান রত্না রশিদ।
মুসলিম বিয়ের গানসহ নানা বিষয়ে গবেষণা রয়েছে রত্না রশিদের। অজস্র প্রবন্ধ ও গল্প লিখেছেন। তাঁর ঝুলিতে রয়েছে ৩০টি পুরস্কার।
অন্নদাশঙ্কর স্মারক সম্মান ফিরিয়ে দেওয়ার কারণ হিসেবে রত্না রশিদ বলেন, ‘এ পুরস্কারের সম্মান রক্ষা হয়নি। সাহিত্য সাধনার বিষয়। আমার এ সিদ্ধান্ত কোনোভাবে রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়।’
অন্যদিকে, বাংলা আকাদেমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিশেষ সম্মান দেওয়ার প্রতিবাদ জানিয়ে সাহিত্য আকাদেমির উপদেষ্টা পর্ষদের অন্যতম সদস্য অনাদিরঞ্জন বিশ্বাস পদত্যাগ করতে চেয়ে চিঠি দিয়েছেন। এ পর্ষদের আঞ্চলিক সম্পাদককে লেখা চিঠিতে তিনি জানান, এ বছরের পঁচিশে বৈশাখ যে ঘটনা ঘটেছে, তা বাংলা কবিতা জগতের জন্য অপমানজনক।
রত্না ও অনাদি নিজেদের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবেন না বলে জানিয়েছেন। রত্না বলেন, ‘সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসব বলে তো প্রতিবাদ জানাইনি।’
অন্যদিকে, অনাদি বলছেন, ‘প্রতিবাদ তো প্রতিবাদই। এ ধরনের অন্যায়ের প্রতিবাদ অতীতেও করে এসেছি, এখনও করছি, ভবিষ্যতেও করব।’