অদ্ভুত কারণ দেখিয়ে খুনের মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত এক স্বামীর প্যারোলে মুক্তি চেয়ে আদালতে আবেদন করেন তার স্ত্রী। আদালতও স্ত্রীর সেই আবেদন মঞ্জুর করেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে প্রতিবেশী দেশ ভারতে।
জানা যায়, একটি খুনের মামলায় নন্দলাল (৩৪) নামের এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন রাজস্থানের ভিলওয়াড়া আদালত। বেশ কয়েক বছর ধরে তিনি জেল খাটছেন। সম্প্রতি তার স্ত্রী রেখা জোধপুর হাইকোর্টে স্বামীর মুক্তি চেয়ে আবেদন করেন। আবেদনে রেখা জানান, তিনি মা হতে চান। কিন্তু তার স্বামী জেলে থাকায় সেটি সম্ভব হচ্ছে না।
রেখার আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালতের পর্যবেক্ষণ- যেকোনো নারীর সন্তানধারণ তার প্রাথমিক অধিকারের মধ্যে পড়ে। আইন এই অধিকার থেকে তাকে বঞ্চিত করতে পারে না। তাই জোধপুর হাইকোর্টের বিচারপতি সন্দীপ মেহতা ওই নারীর দাবি যথাযথ বলে রায় দেন।
আদালতের পর্যবেক্ষণে আরও বলা হয়, নন্দলাল জেলে থাকায় তার স্ত্রীর জীবনে এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। আর যেহেতু তার স্ত্রী কোনো অপরাধ করেনি, তাই আদালতের কাছে তার দাবির যৌক্তিকতা রয়েছে।
উচ্চ আদালত জানিয়েছেন, ১৫ দিনের জন্য ওই নারীর স্বামীকে প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হবে। আর এই সময়ের মধ্যে গর্ভধারণের সুযোগ পাবেন ওই দম্পতি।
প্যারোলে মুক্তির রায় নিয়ে আদালত জানান, বংশ বিস্তার ও সংরক্ষণ ভারতীয় সংস্কৃতি এবং ধর্মীয় দর্শনের মধ্যে পড়ে। আইন সেটিকে আমলে নিয়েছে। প্যারোলে মুক্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে আদালত হিন্দু শাস্ত্র, বিশেষত ঋগ্বেদ, ইসলাম, ইহুদি ও খ্রিস্টান ধর্মের প্রসঙ্গ টেনেছেন।
‘একজন বন্দিকে প্যারোলে মুক্তি দেওয়ার উদ্দেশ্য হলো- শান্তিপূর্ণভাবে সমাজের মূল ধারায় ফেরার ক্ষেত্রে তাকে পুনরায় উৎসাহিত করা।’
এর আগে ২০ দিনের জন্য প্যারোলে ছাড়া পেয়েছিলেন নন্দলাল। সে সময় ভালো আচরণের পাশাপাশি মেয়াদ শেষের পরে নন্দলাল আত্মসমর্পণ করায় খুশি হয়ে আদালত তার প্যারোল মঞ্জুর করেন।