ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) দুই সদস্যের মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্যের প্রতিবাদে মুসলিমদের বিক্ষোভ স্থগিতের আহ্বান জানিয়েছেন ইসলামি বিভিন্ন সংগঠন এবং মসজিদের নেতারা।
গত সপ্তাহে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভ সহিংস আকার ধারণ করায় বড় ধরনের জনসমাগম বাতিলের আহ্বান জানিয়ে বার্তা প্রচার করে মুসলিমদের সংগঠনগুলো।
ঝাড়খণ্ড প্রদেশে মহানবীকে (সা.) অবমাননার প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ ঘিরে সহিংসতায় দুই কিশোরের প্রাণহানি, পুলিশসহ ৩০ জনের বেশি আহত হওয়ার পর ওই আহ্বান জানানো হয়। খবর রয়টার্সের।
ভারতের কয়েকটি প্রদেশে ইসলামভিত্তিক রাজনৈতিক দল জামায়াত-ই-ইসলামি হিন্দ কার্যক্রম পরিচালনা করে। এই সংগঠনটির জ্যেষ্ঠ নেতা মালিক আসলাম বলেছেন, ‘কেউ যখন ইসলামের অবমাননা করেন, তখন ঐক্যবদ্ধভাবে দাঁড়ানো প্রত্যেক মুসলমানের কর্তব্য হয়ে যায়। তবে একই সঙ্গে শান্তি বজায় রাখাও গুরুত্বপূর্ণ।’
ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সাবেক মুখপাত্র নূপুর শর্মা গত মাসে এক টেলিভিশন শোতে অংশ নিয়ে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন। পরে দলটির নয়াদিল্লি শাখার গণমাধ্যম প্রধান নবীন জিন্দালও নূপুর শর্মার মন্তব্যের সমর্থনে টুইট করেন।
তাদের এই মন্তব্য সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়কে ক্ষুব্ধ করে তোলে। এমনকি অভিযুক্তদের মন্তব্যের জেরে ভারতের কয়েকটি রাজ্যের মুসলিমরা বিক্ষিপ্তভাবে প্রতিবাদ বিক্ষোভ করেন। আর এর রেশ ভারতের গণ্ডি ছাড়িয়ে বাইরের বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।
দেশে-বিদেশে তীব্র প্রতিক্রিয়ার মুখে অভিযুক্ত নূপুর শর্মাকে দল থেকে বরখাস্ত এবং জিন্দালকে বহিষ্কার করে বিজেপি। পরে বিজেপির এই দুই নেতা প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে বিবৃতিও দিয়েছেন। ভারতের পুলিশ বিজেপির সাবেক এই দুই নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে।
এ ছাড়া, বিভিন্ন প্রদেশের সংখ্যালঘু মুসলিমরা নূপুর শর্মা ও নবীন জিন্দালের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে। কিন্তু তারপরও বিতর্কিত মন্তব্যের প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ মুসলিমদের রাস্তায় নেমে আসা বন্ধ হয়নি। পুলিশ বলছে, কয়েকটি রাজ্যে বিশৃঙ্খলার সময় দাঙ্গা সৃষ্টির দায়ে কমপক্ষে ৪০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিছু কিছু স্থানে কারফিউ জারি এবং ইন্টারনেট সেবা স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে।