ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে খাবার জলের তীব্র সংকটে রীতিমত হাহাকার চলছে। পুকুর, টিউবয়েল কিংবা কূপ, কোথাও মিলছে না জল। সম্প্রতি মধ্যপ্রদেশের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এতে দেখা যায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গভীর কূয়ায় নেমে জল তুলছেন লোকজন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, কোনো রকম দড়ি বা সুরক্ষা সরঞ্জাম ছাড়াই জল সংগ্রহ করতে কুয়ার মধ্যে নেমে পড়েছেন তারা। জল সংগ্রহের পর সেখান থেকে আবার দেয়াল বেয়ে তারা উপরে উঠে আসছেন।
মধ্যপ্রদেশের ঘুসিয়া গ্রামের কুয়া ও জলাধারগুলো শুকিয়ে যাওয়ায় সেখানকার লোকজনকে কুয়ার মধ্যে নেমে পড়ার মতো ঝুঁকি নিয়ে জল সংগ্রহ করতে হচ্ছে। ভারতের আরো কিছু এলাকায় জলের এমন তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।
তবে জলের জন্য জীবন বিপন্ন করে কুয়ার নেমে পড়ার এমন দৃশ্য ভারতে প্রায়ই দেখা যায়। গত এপ্রিল মাসে মহারাষ্ট্রে এক নারীর কুয়ায় নেমে পড়ার ভিডিও ব্যাপকভাবে অনলাইনে ছড়িয়ে পড়েছিল।
২০১৯ সালের এক বৈশ্বিক প্রতিবেদনে জলের তীব্র সংকটে থাকা ১৭টি দেশের তালিকায় নাম ছিল ভারতের।
ওই প্রতিবেদনে ভারতের মধ্যপ্রদেশ, পাঞ্জাব, রাজস্থান, উত্তর প্রদেশ, গুজরাট, উত্তরাখন্ড ও হরিয়ানা অঞ্চলকে জল সংকটে থাকা এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
ঘুসিয়া গ্রামের লোকজন এই তীব্র জল সংকটের কারণে সরকারের ওপর ক্ষুব্ধ। তারা এ বছর স্থানীয় নির্বাচন বর্জনের হুমকি দিয়েছে। ভারতের বার্তা সংস্থা এএনআইকে স্থানীয় এক নারী বলেছেন, ‘জল সংগ্রহ করতে আমাদের কুয়ার মধ্যে নামতে হয়। এখানে তিনটি কুয়া আছে। সব কটি শুকিয়ে গেছে। কোনো হস্তচালিত পাম্পে জল উঠছে না। সরকারি কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতারা কেবল ভোটের সময় আসেন। এবার জল সরবরাহ ঠিক না করা পর্যন্ত আমরা ভোট দেব না।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এই ভিডিও দেখে অনেকেই একে হৃদয়বিদারক হিসেবে মন্তব্য করেছেন এবং কর্মকর্তাদের জরুরি সাহায্য করার আহ্বান জানিয়েছেন।
বিশ্বে ভূগর্ভস্থ জলের সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয় ভারতে। দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য ভূগর্ভস্থ জলের ওপরে নির্ভর করতে হয় অনেক মানুষকে। তবে বিশ্বব্যাংক বলছে, দেশটির দুই-তৃতীয়াংশ জেলায় ভূগর্ভস্থ জলের স্তর নেমে গেছে। ২০৫০ সাল নাগাদ তীব্র জলের সংকটে ভুগবে দেশটি। আর দেশটির ৩০টির বেশি শহর এর উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে।