ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির দুই মুখপাত্রের মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে করা অবমাননাকর মন্তব্য মুসলিমদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের জন্ম দেয়। সেসব মন্তব্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভও হয়। কিন্তু, এ বিক্ষোভে নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে।
এবার এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিবৃতি দিয়েছে মানবাধিকার-বিষয়ক সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। সংস্থাটি ভারত সরকারকে মুসলিমদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত না করার আহ্বান জানিয়েছে।
সম্প্রতি একটি সংবাদমাধ্যমে বিজেপির মুখপাত্র (বর্তমানে বহিষ্কৃত) নূপুর শর্মার অবমাননাকর মন্তব্যের জেরে আরব বিশ্বে কঠোর সমালোচনার মুখে পড়ে ভারত। একাধিক দেশ ভারতের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে বিজেপি মুখপাত্রের মন্তব্যের বিরোধিতা করে। পশ্চিম এশিয়ার একাধিক বাণিজ্যিক স্থলে ভারতীয় পণ্য বয়কট করা হয়। ওই মন্তব্যের জেরে বিরোধিতা, বিক্ষোভ শুরু হয় ভারতেও। কিন্তু, বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলো সে বিক্ষোভ দমনে ‘বাড়তি’ পদক্ষেপ গ্রহণ করে বলে অভিযোগ উঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিবৃতি দিল অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
বিবৃতিতে বলা হয়, বিক্ষোভ দমনে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ যেন অবিলম্বে অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ থেকে বিরত হয়।
⚡️Indian authorities must immediately put an end to the excessive use of force in response to large scale protests in the country that has resulted in the death of at least 2 people, including a child, and in many others suffering injuries since last Friday.
— Amnesty International (@amnesty) June 14, 2022
বিক্ষোভ দমনের কঠোরতায় ভারতে এক শিশুসহ দুজনের মৃত্যু হয়েছে বলেও দাবি করেছে অ্যামনেস্টি। সংস্থাটি বলেছে, শান্তিপূর্ণ উপায়ে যাঁরা প্রতিবাদ জানাচ্ছেন, তাঁদের যে কায়দায় আইনশৃঙ্খলার জন্য ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে, তা গভীর উদ্বেগের বিষয়। একই সঙ্গে মুসলিমদের নিশানা করে সরকার ক্রমাগত যে পদক্ষেপ নিচ্ছে, তা-ও চিন্তার বিষয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ভারত সরকার প্রতিশোধমূলক ভাবেবেছে বেছে সেসব মুসলিমদের ওপর নিপীড়ন চালাচ্ছে—যাঁরা মুখ খোলার সাহস দেখাচ্ছেন বা শান্তিপূর্ণ উপায়ে তাঁদের ওপর হওয়া বিদ্বেষের প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।
এ বিষয়ে এখনও ভারত সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সাল থেকে ভারতে কাজ বন্ধ করে দিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। দুর্নীতির অভিযোগে ‘এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)’ সংস্থাটির সব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং আর্থিক লেনদেন বন্ধ করে দেয়। প্রশ্ন তোলা হয় সংস্থায় গৃহীত বিদেশি অনুদানের স্বচ্ছতা নিয়েও। এরপরই ভারতে সব শাখা বন্ধ করে দেশত্যাগ করে অ্যামনেস্টি।