বিশেষ: ১ কেজির দাম ১ লক্ষ টাকা, বিশ্বের সবচেয়ে দামি সবজি চাষ করে, উপার্জনের দিশা দেখাচ্ছেন অমরেশ!

বিশ্বের সবচেয়ে দামি সবজি হপ শুটের চাষে দিশা দেখাচ্ছেন বিহারের অমরেশ!- এক কেজির দাম প্রায় এক লক্ষ টাকা। বিশ্বের সবচেয়ে দুর্মূল্য গাছ হপ শুট-এর চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন বিহারের ঔরঙ্গাবাদের যুবক অমরেশ সিং। আপাতত পাঁচ কাঠা জমিতে পরীক্ষা মূলকভাবে এই গাছের চাষ করেছেন অমরেশ। ভবিষ্যতে আরও বড় আকারে এই চাষ করতে চান বলে জানিয়েছেন তিনি।২০১২ সালে হাজারিবাগের সেন্ট কলম্বাস কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেন অমরেশ। তারপর ঔরঙ্গাবাদের করমডিহ গ্রামে ফিরে এসে হপ শুট চাষের পরিকল্পনা করেন। ভারতের বাজারে এই গাছ প্রায় দেখাই যায় না। বিশেষ অর্ডার দিয়ে এই সবজি আনতে হয়।

অমরেশ জানান, ছয় বছর আগে এই গাছের দাম ছিল প্রতি কেজি ১ হাজার পাউন্ড (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় এক লক্ষ টাকা)। বারাণসীর ইন্ডিয়ান ভেজিটেবল রিসার্চ ইনস্টিটিউটের কৃষিবিজ্ঞানী ডঃ লালের তত্ত্বাবধানে এই চাষ শুরু হয়। অমরেশ বলেন, মোট যতটা জমিতে চাষ করা হয়েছিল, তার ৬০ শতাংশের বেশি এলাকায় সফলভাবে হপ শুটের চাষ হয়েছে। হপ শুটের ফল, ফুল ও কাণ্ড- সব কিছুই ব্যবহার করা যায়। মূলত বিয়ার সহ

বিভিন্ন পানীয়, অ্যান্টিবায়োটিক তৈরিতে এই গাছ কাজে লাগে। এছাড়া হপ শুটের কাণ্ড দিয়ে যক্ষ্মা প্রতিরোধী ওষুধ তৈরি হয়। হপ শুটের ফলকে বলা হয় হপ কোন। যা বিয়ার তৈরির অন্যতম উপাদান। এছাড়া অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টে ভরপুর এই গাছের ইউরোপের দেশগুলিতে ব্যাপক

চাহিদা রয়েছে। একাদশ শতকে এই হপ শুট প্রথম খুঁজে পাওয়া যায়, সেই সময় পানীয়ে স্বাদ বাড়াতে ও ওষধি গাছ হিসেবে এটির ব্যবহার হত। এই গাছে হিউমুলোনস ও লুপুলোনস নামে দুধরনের অ্যাসিডের উপস্থিতি পাওয়া যায়, যা মানুষের শরীরে ক্যানসার কোষ মারতে পারে বলে ধারণা বিজ্ঞানীদের। এছাড়া হপ শুট ডিপ্রেশন, মানসিক চাপ ও ঘুমের সমস্যা কাটাতে সাহায্য করে। অমরেশ বলেন, দুমাস আগে ইন্ডিয়ান ভেজিটেবল রিসার্চ ইনস্টিটিউট থেকে হপ শুটের চারা কিনে এনে লাগিয়েছিলাম।

এই চাষ যদি বিহারের মাটিতে করা যায়, তাহলে রাজ্যের চাষবাসের ছবিটাই পালটে যাবে। হপ শুট চাষের জন্য কেন্দ্র যাতে চাষিদের উৎসাহ দেয়, তার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছেও আবেদন করেছেন অমরেশ। এই চাষ করলে কৃষকরা দশগুণ রোজগার করতে পারবেন বলে মনে করছেন অমরেশ। তিনি জানান, ইউরোপেরদেশগুলির মধ্যে ব্রিটেন, জার্মানিতে হপ শুটের চাষ হয়। ভারতেও হিমাচলপ্রদেশে একসময় এর চাষ হয়েছিল কিন্তু অত্যধিক দামের জন্য বাজারে জনপ্রিয় হয়নি। তা সত্ত্বেও কেন তিনি ঝুঁকি নিচ্ছেন? এই প্রশ্নের উত্তরে অমরেশ বলেন, একজন কৃষক যদি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ঝুঁকি নেন তাহলে তিনি জিতবেনই। আমি বিহারে হপ শুট চাষের ঝুঁকি নিয়েছিলাম। আশা করি ভবিষ্যতে এটা উদাহরণ হিসেবে থেকে যাবে।

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy